বাংলাদেশের পয়লা ফাল্গুন আর বিশ্বব্যাপী উদযাপিত ভ্যালেন্টাইন্স ডে’কে উপলক্ষ করে ভালোবাসার উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে গেল নিউইয়র্কের বাফেলোতে। বাফেলো ১২০ আলেকজা-ার এভিনিউতে আর জে প্রোডাকশন আয়োজিত বর্ণাঢ্য সঙ্গীত ও নাট্যানুষ্ঠানের নাম ছিল ‘বসন্ত এসে গেছে’। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাউন্টেন ব্যাটালিয়ান কমান্ডার, গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডর, নিউইয়র্কে হোম কেয়ার সেবার পথিকৃৎ, ভলোবাসার ফেরিওয়ালা খ্যাত স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ ছিলেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। তিনি বলেন, একজন বাঙালি সন্তানের জন্মগ্রহণের পর প্রথম যে শিক্ষাটি লাভ করে সেটি হচ্ছে ভালোবাসা ও মমতার শিক্ষা।
আমাদের শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রধান সুর ভালোবাসা। ভালোবাসাই একজন মানুষকে শুদ্ধ করতে পারে। তিনি মানুষের জীবনে ধর্মাচারের অপরিহার্য প্রভাবের কথা তুলে ধরে বলেন, জন্মের পর প্রথম শুনেছি আজানের ধ্বনি। আমার জীবনের প্রথম কৃষ্টি, প্রথম সংস্কৃতি আজান। প্রত্যেক বাঙালি মুসলমান একই কৃষ্টিতে লালিত। আমরা যেন আমাদের কৃষ্টি ভুলে না যাই। এই কৃষ্টি নিয়েই সকল উৎসব করতে হবে। ষড়ঋতুর বাংলাদেশে প্রত্যেক ঋতুতেই উৎসব আছে। বসন্তের উৎসবের মতো অন্য ঋতুতেও আছে উৎসব। এই উৎসবের ভেতর দিয়েই আমরা কৃষ্টি, ধর্ম ও জাতিসত্তাকে একটি সূত্রে বাঁধতে পারি। অনুষ্ঠানে আর জে প্রোডাকশনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন শামীমুল হক রাজন ও রাতনুন আলম ঝর্না। বক্তব্য রাখেন মহসীন রেজা, নাসরিন ও অধ্যাপক জোবায়দুর রহমান খান। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অভিনেতা ও আবৃত্তিশিল্পী টনি ডয়েস ও প্রিয়া ডান্স একাডেমীর প্রধান নির্বাহী প্রিয়া ডায়েস এর বিশেষ নৃত্যনাট্য পরিবেশনা দর্শকদের মুগ্ধ করে। অনুষ্ঠানে টাইটেল স্পন্সর ছিল দেশী স্বাদ ক্যাটারিং।
স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেন, প্রকৃতি প্রতিটি সময় আমাদের সামনে উৎসব হিসেবে হাজির হয়। প্রকৃতির এই উদারতা ও শক্তিকে মূল্যায়ণ করতে হবে। তিনি তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন, মাটির প্রতি ভালোবাসা আর শত্রুর প্রতি দ্রোহ সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছি। তাই তোমাদের উদ্দেশ্যে আমার একটাই পরামর্শ, ভালোবাসার শক্তিকে ধরে রাখো। বেশি বেশি ভালোবাসো। ভালোবাসবে নিজের দেশ ও আপনজনকে। তোমাদের দেশপ্রেম ও ভালোবাসার শক্তিই বিশ্বজয়ের মর্যাদা এনে দিতে পারে।
তিনি বলেন, ১৭ বছর আগে আমি নিউইয়র্কে প্রথম হোম কেয়ার সেবা চালু করি আজ সারা নিউইয়র্কে বহু হোম কেয়ার প্রতিষ্ঠান। সবই আমাদের প্রতিষ্ঠান। মানবসেবার ক্ষেত্রে এটিই বাংলাদেশিদের অনন্যতা। সবাইকেই সহযোগিতা করতে হবে। এটিই ভালোবাসর অনন্য দৃষ্টান্ত। তবে তিনি বলেন, হোম কেয়ার কারো শুধু ব্যবসা নয়। হোম কেয়ার শুধু টাকা উপার্জনের যন্ত্র নয়।
উল্লেখ্য, বাফেলোতে দুইদিন ব্যস্ততম সময় অতিবাহিত করেন স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ। স্থানীয় কমিউনিটি গণমাধ্যম বাফেলো প্রতিদিন ও বাফেলো বাংলা টেলিভিশন প্রচার করে তার বিশেষ সাক্ষাৎকার। এছাড়া বাফেলো’র বেইলি এভিনিউতে বাংলা সিডিপ্যাপ সার্ভিসেস ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ার ইনক্ এর নিজস্ব কার্যালয়ে তার সম্মানে সুধী সমাবেশ ও প্রীতিভোজের আয়োজন করে সন্দ্বীপ অ্যালায়েন্স। আয়োজন তত্বাবধান করেন অ্যালায়েন্সের সভাপতি সিরাজুদ্দৌলা বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক জাফরুল ইসলাম জুয়েল।