জয় বাংলাদেশ : গত দুই মাস ধরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ বেড়েছে। এই রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভের পরিমাণও বাড়ছে। তবে নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ) এখনো ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে (৪৮ বিলিয়ন) উঠেছিল।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বিপিএম-৬ পরিমাপ অনুযায়ী নেট রিজার্ভ হিসাব করা হয়। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নেট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আইএমএফের ঋণ অনুমোদনের পর জুলাই ২০২৩ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভের তথ্য প্রকাশ করছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ৮ অক্টোবর পর্যন্ত গ্রস (মোট) রিজার্ভ ২ হাজার ৪৯৭ কোটি মার্কিন ডলার বা ২৪ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ১ হাজার ৯৮২ কোটি ডলার (১৯ দশমিক ৮২ বিলিয়ন)। গত সপ্তাহে অর্থাৎ ২ অক্টোবর গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন এবং বিপিএম-৬ ছিল ১৯ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার। সেই হিসাবে রিজার্ভ সামান্য বেড়েছে।
চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) বা ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ আছে ১ হাজার ৪৭১ কোটি মার্কিন ডলার (১৪ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার)। প্রতি মাসে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসাবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে না। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পক্ষ থেকে সেপ্টেম্বরের জন্য বেঁধে দেওয়া ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের লক্ষ্য ১৪ দশমিক ৮৮ বিলিয়ন ডলার।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি একটি প্রোগ্রামে বলেন, বৈশ্বিক আর্থিক সংকটে আমাদের সমস্যা হয়নি, আমরা ভাগ্যবান। চার-পাঁচটি পরিবার ব্যাংক থেকে দুই লাখ কোটি টাকা নিয়ে গেছে। এতে অর্থনীতিতে মন্দা নেমে আসতে পারত, সেটা হয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করলে ছয় মাস পর শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি হয়ে যাবে। এটা কোনো সমাধান হতে পারে না। এ জন্য আমাদের কিছুদিন কষ্ট করতে হবে।
গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছে ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল। তারও আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিক্রি করে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি করে ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।