Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeআন্তর্জাতিকরোহিঙ্গাদের ওপর ২০১৭ সালের নৃশংসতার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা : জাতিসংঘ

রোহিঙ্গাদের ওপর ২০১৭ সালের নৃশংসতার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা : জাতিসংঘ

জয় বাংলাদেশ : মিয়ানমার পরিস্থিতির তীব্র অবনতি এবং রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে পালানোর সময় কয়েকশ’ বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক। গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী নাফ নদীতে সবচেয়ে মারাত্মক সশস্ত্র ড্রোন হামলায় অনেক লোক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে কারা এই হামলার জন্য দায়ী তা এখনও স্পষ্ট নয়। মিয়ানমার পরিস্থিতির তীব্র অবনতি এবং রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে পালানোর সময় কয়েকশ’ বেসামরিক লোক নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন তুর্ক।

তিনি বলেন, ‘এই নৃশংসতা একটি দ্ব্যর্থহীন প্রতিক্রিয়া দাবি করে- দায়ীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে এবং ন্যায়বিচার অবশ্যই নিরলসভাবে নিশ্চিত করতে হবে।’জেনেভা থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, নৈতিক দায়িত্ব এবং আইনগত বাধ্যবাধকতা হিসেবে অতীতের অপরাধ ও ভয়াবহতার পুনরাবৃত্তিকে অবশ্যই প্রতিরোধ করতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘রোহিঙ্গা ও এই নিষ্ঠুর সংঘাতের শিকার অন্যান্য বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় এগিয়ে এসে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা আসিয়ান ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব।’

গত চার মাসে বুথিডং ও মংডু শহর সেনাবাহিনীর কাছ থেকে দখল নিতে আরাকান আর্মির বড় ধরনের অভিযানে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে গেছে, যাদের বেশিরভাগই রোহিঙ্গা।

গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী নাফ নদীতে সবচেয়ে মারাত্মক সশস্ত্র ড্রোন হামলায় অনেক লোক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে কারা এই হামলার জন্য দায়ী তা এখনও স্পষ্ট নয়।

তুর্ক বলেন, ‘হাজার হাজার রোহিঙ্গা পায়ে হেঁটে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। আরাকান আর্মি তাদের বারবার এমন জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে, যেখানে তাদের আশ্রয় গ্রহণ খুবই কম নিরাপদ।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সীমান্ত পারাপার বন্ধ থাকায় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সদস্যরা সামরিক বাহিনী ও তাদের মিত্র এবং আরাকান আর্মির মাঝে আটকা পড়ছে, তাদের নিরাপদ কোনো পথ নেই।’

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান বলেন, বারবার সতর্ক করা এবং ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান সত্ত্বেও চলমান সহিংসতা বিদ্যমান দায়মুক্তির বোধ এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অব্যাহত চ্যালেঞ্জকে তুলে ধরে।

তুর্ক বলেন, “চলতি মাসে মিয়ানমারে সামরিক অভিযানের সাত বছর পূর্ণ হলো। ওই অভিযানে সীমান্ত পেরিয়ে ৭ লাখ মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। বিশ্ব ‘আর পুনরাবৃত্তি নয়’ বলা সত্ত্বেও আমরা আবারও রাখাইনে হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ ও বাস্তুচ্যুতি প্রত্যক্ষ করছি। সশস্ত্র সংঘাতের পক্ষগুলো রোহিঙ্গা ও অন্যদের বিরুদ্ধে হামলার দায় অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে। তারা এমন আচরণ করছে যেন তাদের রক্ষা করার ক্ষমতা নেই। এটি বিশ্বাসযোগ্যতার সীমা ছাড়িয়েছে।”

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের নথিভুক্ত তথ্য অনুসারে, সেনাবাহিনী এবং আরাকান আর্মি এখন রাখাইনের বেশিরভাগ জনপদ নিয়ন্ত্রণ করে। উভয়ই রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড- কিছু শিরশ্ছেদ, অপহরণ, জোরপূর্বক নিয়োগ, ড্রোন এবং আর্টিলারি ব্যবহার করে শহর ও গ্রামে নির্বিচারে বোমা হামলা এবং অগ্নিসংযোগসহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন করছে।

এ ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের আলোকে সব পক্ষের বাধ্যবাধকতা এবং রোহিঙ্গাদের আরও ক্ষতির ঝুঁকি থেকে রক্ষায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের আদেশের অস্থায়ী ব্যবস্থার সম্পূর্ণ বিপরীত।

বিশ্বাসযোগ্য সূত্রগুলোর মতে, সংঘাত-সম্পর্কিত আঘাতের জন্য সহায়তা চাওয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়ছে- যাদের প্রায় অর্ধেকই শিশু।

এছাড়া ডায়রিয়ায়, বিশুদ্ধ পানির অভাব এবং জীবনযাত্রার অপ্রতুলতার কারণেও মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বেসামরিক নাগরিকদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় রসদ রাখা খাদ্যগুদামগুলোতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

সহিংসতার কারণে বুথিডং এবং মংডু হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ব্যাপক টেলিযোগাযোগ বন্ধের কারণে ইতোমধ্যে বিপর্যয়কর মানবিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments