Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeআন্তর্জাতিকলেবাননে ইসরায়েলের তীব্র হামলা, চরম সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্য

লেবাননে ইসরায়েলের তীব্র হামলা, চরম সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্য

জয় বাংলাদেশ : ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধের মধ্যেই তীব্রতর হচ্ছে ইসরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘর্ষ। লেবাননজুড়ে ইলেকট্রনিক ডিভাইসে বিস্ফোরণের ঘটনার পর ইসরায়েলকে ‘সাজা’ দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ। এ হুমকির দিনই গোষ্ঠীটির ওপর সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে যেকোনো সময় মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে চরম সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নিয়মিত পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ। এরই মধ্যে গত মঙ্গল ও বুধবার লেবাননজুড়ে পেজার (যোগাযোগ যন্ত্র), ওয়াকিটকিসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে হিজবুল্লাহ সদস্যসহ ৩৭ জন নিহত হন। আহত হন তিন হাজারের বেশি মানুষ। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার হাসান নাসরুল্লাহ বলেন, ডিভাইসে বিস্ফোরণের ঘটনার মধ্য দিয়ে সব চরম সীমা অতিক্রম করেছে ইসরায়েল। এর সাজা দেওয়া হবে।

এদিকে বৃহস্পতিবারেই হিজবুল্লাহর প্রায় ১০০টি রকেট উৎক্ষেপণ ব্যবস্থায় নতুন করে হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত ৫২টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এর আগে উত্তর ইসরায়েলে দেশটির সামরিক স্থাপনাগুলোয় অন্তত ১৭টি হামলা চালানোর কথা জানায় হিজবুল্লাহ।

লেবাননের নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় দেশটিতে চারজন আহত হয়েছেন। তবে তাঁদের মধ্যে কেউ হিজবুল্লাহ সদস্য কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট করা হয়নি। এদিকে আজ শুক্রবারও দক্ষিণ লেবাননের অন্তত তিনটি গ্রামে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হিজবুল্লাহ পরিচালিত আল–মানার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, আজকের একটি হামলার পর ঘটনাস্থল থেকে ধোঁয়া উঠছে।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর উদ্বেগ
এর আগে ২০০৬ সালে ইসরায়েল ও ইরানপন্থী হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল। এরপর গত এক বছর ধরে চলা দুই পক্ষের এ সংঘাতকে সবচেয়ে ভয়াবহ বলা হচ্ছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবারে ইসরায়েলের হামলাকে সবচেয়ে তীব্র বলা হচ্ছে। এ দিনই ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট বলেছেন, তাঁরা হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাবেন।

ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে চলমান এ সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে লেবাননে নিযুক্ত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী (ইউএনআইএফআইএল)। শুক্রবার সকালে তারা বলেছে, আগের ১২ ঘণ্টায় লেবানন–ইসরায়েল সীমান্ত ও সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলোয় ‘তীব্র লড়াই’ দেখা গেছে।

ইউএনআইএফআইএলের মুখপাত্র আন্দ্রেয়া তেনেন্তি রয়টার্সকে বলেছেন, ‘ব্লু লাইন ঘিরে সংঘাত বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। এমন পরিস্থিতিতে সংঘাত কমাতে আমরা সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’ ইসরায়েল ও লেবাননের মধ্যকার সীমান্তকে ‘ব্লু লাইন’ বলা হয়।

‘মধ্যপ্রাচ্যে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র’

সংঘাত কমাতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। এ সমস্যার কূটনৈতিক সমাধানের ওপর জোর দিচ্ছে তারা। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, ‘ইসরায়েলের নিজেদের রক্ষার যে অধিকার রয়েছে, তার পক্ষে আমরা থাকব। তবে এই সংঘাত কোনো পক্ষ বাড়িয়ে দিচ্ছে—এমনটি আমরা দেখতে চাই না।’

বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার মধ্যে গত বছর থেকে এ অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মিত্রদের সুরক্ষা দেওয়া এবং নিজেদের ওপর হামলা ঠেকাতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৪০ হাজার সেনা, অন্তত এক ডজন যুদ্ধজাহাজ ও বিমানবাহিনীর চার স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান মোতায়েন করা রয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments