কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাঁধে বন্দুক রেখে বিএনপি বর্তমান সরকারকে নিশানা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতৃবৃন্দ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কাঁধে বন্দুক রেখে বর্তমান সরকারকে নিশানা করেছে। বারবার জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে ক্ষমতা দখলের জন্য ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করা তাদের এখন একমাত্র কৌশল। যেকোনো আন্দোলন দেখলেই তারা সেখানে অনুপ্রবেশ করে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দিতে উন্মত্ত হয়ে ওঠে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছে এবং সরকার তাদের সকল দাবি পূরণ করেছে। অথচ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন সরকারের পদত্যাগ দাবি করছেন। সরকারের পদত্যাগের দাবি শুধুমাত্র সরকারবিরোধী বা দেশবিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামায়াতের। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকার পরিবর্তন কেবল জনরায়ের মাধ্যমেই সম্ভব।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার জনগণের রায় নিয়ে সাংবিধানিক পন্থায় রাষ্ট্র পরিচালনার করছে। সকল উস্কানি ও নৈরাজ্যের মুখেও সরকার সর্বোচ্চ ধৈর্য ও সংযম ধারণ করেছে এবং জনগণকে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস-সহিংসতা থেকে সুরক্ষা দেওয়ার নিরন্তন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার বা নির্যাতন করেনি। যারা সন্ত্রাস ও সহিংসতায় সরাসরি জড়িত ছিল শুধু তাদের সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হচ্ছে। অথচ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উস্কানি দেওয়া হচ্ছে।
সাইবার সন্ত্রাসীরা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ভুল তথ্য ও ভুয়া ছবি পাঠিয়ে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন সেতুমন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সশস্ত্র ক্যাডাররা মেট্রোরেল, বিটিভিসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় সুপরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, যারা ইতিহাসের ন্যাক্কারজনক ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। জনগণের শান্তি, শৃঙ্খলা ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষায় সরকার সর্বোচ্চ কঠোরতা প্রদর্শন করবে।
বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সন্ত্রাস-সহিংসতায় প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে সরকার বদ্ধপরিকর। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আন্দোলনে নিহতদের তালিকা প্রকাশ হয়নি মর্মে মন্তব্য করেছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সন্ত্রাস-সহিংসতা ও নাশকতায় নিহতের সংখ্যা গণমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব হত্যাকাণ্ড নিয়ে মন্তব্য করে বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
মির্জা ফখরুল ও বিএনপি-জামায়াত যেকোনো প্রকারে ক্ষমতা দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলেও জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এসব সন্ত্রাসী ঘটনার মদদদাতা, অর্থের জোগানদাতাদের চিহ্নিত করেছে এবং তাদের গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বিএনপি-জামায়াত দেশবিরোধী অপশক্তি বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে এবং এ দেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে তাদের জীবনের বিনিময়ে দেশের অর্জিত গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর।