বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এমপি বলেছেন, বর্তমানে শুধু পাহাড়ে নয়, সারাদেশেই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় নির্বিচারে মানুষ হত্যা হচ্ছে, শিশুদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হচ্ছে, অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে। দেশে জবাবদিহিতা না থাকায় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমত দায়িত্ব পালন করছে না।
রোববার (৭ এপ্রিল) রংপুরে এক সপ্তাহের সফরে এসে সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এ মন্তব্য করেন তিনি।
জিএম কাদের বলেন, আমরা জানি দুর্ঘটনা হঠাৎ করে হয়। কিন্তু দেশে প্রতিনিয়ত বাস দুর্ঘটনা হচ্ছে, ট্রেন দুর্ঘটনা হচ্ছে। তাই দুর্ঘটনা এখন স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এখন পাহাড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিষয়টি যেন স্বাভাবিক বিষয় হয়ে না দাঁড়ায় আমরা সেই দাবি জানাই। আমরা পাহাড়ে যেতে চাই, বসবাস করতে চাই। তবে বলতে পারি প্রাথমিকভাবে তারা তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। তারা এই অঙ্গীকার করেই ক্ষমতায় থাকে। আমাদের যথেষ্ট পরিমাণ সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী রয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা চৌকি রয়েছে। এত কিছুর মাঝেও দীর্ঘ সময় ধরে পাহাড়ি সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা কীভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। ব্যাংক লুট হলো, অপহরণ হচ্ছে, থানা আক্রমণ হলো, অস্ত্র লুট করা হলো। এমন ঘটনা বারবারই ঘটছে। সন্ত্রাসীদের এমন কর্মকাণ্ড সরকারের রুখে দেওয়ার কথা ছিল। ব্যাপক প্রস্তুতি থাকার কথা ছিল। সরকার এ ঘটনা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে, বড় ধরনের কোনো বিপদ হলে আমরা কোথায় দিয়ে দাঁড়াব?
দেশে সুশাসনের অভাব উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, দেশে জবাবদিহিতা থাকে না তখনই, যখন গণতন্ত্র থাকে না। নির্বাচন সঠিকভাবে হয় না। মানুষ সার্বিকভাবে মূল্যায়নের সুযোগ পায় না। আমরা ট্যাক্সের টাকা দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রতিপালন করি। কিন্তু তারা নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা তাদের কার্যক্রম দেখে স্বস্তিবোধ করতে পারছি না। ফলে যারা পাহাড়ি এলাকায় বিনিয়োগ করতে চায়, ব্যবসা করতে চায়, বেড়াতে যেতে চায়, তারা এখন পিছুপা হচ্ছে। এটি দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। বর্তমানে সন্ত্রাসীরা সহিংস কার্যকলাপে চলে গেছে। এটি সরকারকে দেখতে হবে। তাদের কোন দাবি মেনে নিলে সেই ফলাফল আমাদের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে না।
জাতীয় পার্টিতে বিভেদ তৈরিতে সরকারের ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি নিবন্ধিত দল। প্রতিটি নিবন্ধিত দল পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন একটি দিক-নিদের্শনা দিয়ে থাকে। আমরা সেভাবেই দল পরিচালনা করছি। তবে অনেক দিন ধরে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিভেদ সৃষ্টির জন্য সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরকারপন্থী কিছু মিডিয়া ফলাও করে এটি প্রচার করে আমাদের বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে। দল অনেকেই করতে পারে, তবে আমাদের নিবন্ধিত লোগো ব্যবহার করে কেউ সভা-সমাবেশ করতে পারে না। সরকার জানে এটি অবৈধ কিন্তু পদক্ষেপ গ্রহণ করে না।