যাই বলা হোক সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি বলে দাবি করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেন, যারা নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের পরে শুধু জাতীয় পার্টিই আছে। বাকি যারা স্বতন্ত্র তারা সবাই আওয়ামী লীগ সমর্থিত অথবা সরাসরি আওয়ামী লীগের সদস্য। কাজেই তাদের বিরোধী দল হিসেবে থাকার কোনো সুযোগ নেই। সেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে এবং অফিসিয়ালি আমরাই (জাতীয় পার্টি) বিরোধী দল হওয়ার কথা।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) রংপুর নগরীর নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন জিএম কাদের।
এর আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংসদে বিরোধী দলের আসনে জাতীয় পার্টিই বসবে, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যেরা স্বতন্ত্রই।
ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জিএম কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের এই বক্তব্য আমরা স্বাভাবিক মনে করছি। এমন হওয়ারই কথা ছিল। তবে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা আমরা পাইনি। আওয়ামী লীগ থেকে যা বলা হয়েছে, তা নিয়মের কথাই বলা হয়েছে। সংসদে বিরোধী দলে থাকা সব থেকে বেশি আসন যাদের তারাই বিরোধী দল হওয়া কথা।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, গত সংসদেও আমরা বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছি। জনগণের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা জনগণের পক্ষে কথা বলেছি। সরকারের সমালোচনা করেছি, যেখানে দরকার। সরকারের দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন প্রকার অনিয়ম, দলীয়করণ ইত্যাদি কথা আমরা সংসদে বিভিন্ন সময় তুলে ধরেছি। যেসব আইন এসেছে, তাতেও ভূমিকা রেখেছি। সরকারের সমালোচনা যেভাবে করা দরকার, সেভাবে করেছি। যেখানে পরিবর্তন দরকার সেগুলো তুলে ধরেছি এই ভূমিকা। আগামীতেও রাখবো বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
দেশের মানুষের সবচেয়ে বড় কষ্ট দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, লাগামহীনভাবে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে। মানুষের আয় কমছে। কারণ মুদ্রার মান কমছে। প্রতিদিন ডলারের বিপরীতে আমাদের টাকা দুর্বল হচ্ছে, আবার অন্যদিকে মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। নতুন চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। ফলে সার্বিকভাবে দেশের সাধারণ মানুষের অবস্থা ভালো নয়। আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। তারা বলতে গেলে নাভিশ্বাস অবস্থায় আছে। দিন চালাতে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। মানুষের মধ্যে একটা চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এর থেকে উত্তরণ মানুষ আশা করে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া এই ক্ষোভ প্রশমনের উপায় আমি দেখি না। কিন্তু রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এই নির্বাচনের মাধ্যমে আসবে কিনা। এখন পর্যন্ত আমরা এটা নিশ্চিত হতে পারিনি। সামনের দিকে সরকারের জন্য এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা, সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে উন্নতি করা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা।