জয় বাংলাদেশ: বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের জন্য ১৯৭১ সালে যেভাবে মুক্তিযোদ্ধারা আত্মত্যাগ করেছিলেন, ঠিক এভাবেই ২০২৪ সালের আন্দোলনে অনেকেই জীবন উৎসর্গ করেছেন। তবে মনে রাখতে হবে এই বাংলাদেশে স্বৈরাচারের পতন হলেও স্বৈরাচারের দোসররা এখনো রয়ে গেছে। তারা সব সময় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাই বর্তমান সরকার কাজ করতে গিয়ে এমন কিছু যেন না করে, যাতে পতিত স্বৈরাচার আবারও মাথাচাড়া দিতে পারে।’
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঝিনাইদহ শহরের প্রাণকেন্দ্র ‘পায়রা চত্বরে’ জেলা বিএনপি আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় ভার্চ্যুয়ালি সংযুুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অর্পিত দায়িত্ব যথার্থভাবে প্রতিপালনের রোড ম্যাপ তাদেরকেই (অন্তর্বর্তী সরকার) নির্দিষ্ট করতে হবে।
স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে আকস্মিকভাবে সৃষ্ট সাংবিধানিক শূন্যতা পুরণে অন্তর্বর্তী একটি সরকারের কোন বিকল্প ছিল না উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ‘এ বিষয়টি আমরা সবাই জানি। তাই সঙ্গত কারণে তাদের প্রতি আমাদের সমর্থন সেদিনও ছিল, আজও আছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের আস্থাকে প্রশ্নহীন রাখার চ্যালেঞ্জ তাদেরই নিতে হবে।’
এ সময়ে তারেক রহমান আন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তাদের প্রতি আমাদের সেদিন যে সমর্থন ছিল, সেই সমর্থন আজও আছে। তারা জনগণের যে মূল দায়িত্ব পালনের জন্য আজ দায়িত্ব নিয়েছেন, সেই দায়িত্ব যাতে তারা সঠিক ভাবে পালন করতে সক্ষম হন, সেই রকম সমর্থন তাদের প্রতি আমাদের অবশ্যই অব্যাহত থাকবে।’
জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল মজিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ জনসভায় দলের খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারি হেলাল, ব্যরিষ্টার রুহুল কবির কাজল, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা, সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট মুন্সী কামাল আজাদ পান্নু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুর রহমান পপ্পু, যুগ্ম সম্পাদক আসিফ ইকবাল মাখন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম পিন্টুসহ কেন্দ্রিয় ও স্থানীয় নের্তৃবৃন্দ এ জনসভায় বক্তব্য রাখেন।
তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচারের ফেলে যাওয়া দলবাজ উচ্ছিষ্ট প্রশাসনের চলমান ষড়যন্ত্রের কাছে আমরা মাঝে মাঝেই সরকার পরিচালনায় দক্ষ, সৎ ও নিষ্ঠাবানদের অসহায় ও বিপর্যস্ত হতে দেখছি। এর অবসান না হলে, এদের বেড়াজালে আবদ্ধ সরকার ছোট ছোট বিপর্যয়কে এক সময় মহাবিপদ হিসাবে নিজেদের (সরকারের) সামনে দেখতে পাবে। তখন প্রতিকারের পথ হয়ে পড়বে অতি সংকীর্ণ।
তিনি বলেন, স্বৈরাচারের ফেলে যাওয়া দলবাজ প্রশাসনের চলমান ষড়যন্ত্রের কাছে বর্তমান সরকার মাঝে মাঝে অসহায় ও বিপর্যয় বোধ করছেন। এর অবসান যদি না হয় তাহলে দেখা যাবে এদের বেড়াজালে আবদ্ধ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ছোট ছোট বিপর্যয় এক সময় মহা বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে।
স্থানীয় ওয়াজির আলী উচ্চ বিদ্যালয় ময়দানে জনসভার স্থান নির্ধারিত থাকলেও প্রতিকুল আবহাওয়ার কারণে পরবর্তীতে পায়রা চত্বরে জনসভা হয়। দুপুর থেকেই জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার বিএনপি নেতা কর্মী মিছিল সহকারে সভায় যোগদান করেন। আশে পাশের জেলা থেকেও অনেক বিএনপি নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগদেন। এক পর্যায়ে জনসভা স্থল জনসমুদ্রে রূপ নেয়।
এবার দীর্ঘ ১৭ বছর পর ঝিনাইদহে এটিই বিএনপি’র বড় জনসভা।