একটা সময় ছিল যখন বাঙালি নারীদের একমাত্র পোশাকই ছিল শাড়ি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেয়েদের পোশাকে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন মেয়েরা ঘরে–বাইরে সমানে কাজ করছেন। ফলে শাড়ির চেয়ে সালোয়ার–কামিজ ও পশ্চিমা ধাঁচের পোশাকে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তাঁরা। তারপরও এখনো বিয়ে, জন্মদিনসহ যেকোনো সামাজিক বা পারিবারিক অনুষ্ঠানে মেয়েদের প্রথম পছন্দ শাড়ি। যাঁরা নিজেরা শাড়ি পরতে পারেন না, তাঁরা অনুষ্ঠান এলেই শাড়ি পরতে ছোটেন পারলারে।
আবার যাঁরা শাড়ি পরতে পারেন, তাঁদেরও অনেকে অনুষ্ঠানে নিজেকে আরও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে দক্ষ হাতের শরণাপন্ন হন। এমন একজন যিনি একসময় শাড়িই পরতে পারতেন না, তিনি এখন শাড়ি পরিয়ে তারকা। অনুষ্ঠান এবং ব্যক্তি বুঝে ‘ফি’ নেন লাখো রুপি। চমকে উঠলেন! ঘটনা সত্যি, ভারতে ডলি জৈন নামের এক নারী এখন তারকাদের কাছে তারকা।
গত জানুয়ারিতে ইন্ডিয়ান আইডল ১৩ সিজনে হাজির হয়েছিলেন ডলি। সেখানে কথায়–কথায় বললেন, ‘আমার এমন একটা বাড়িতে বিয়ে হয়েছিল, যেখানে বাড়ির বিবাহিত নারীদের শুধু শাড়ি পরতে হতো। আর আমি শাড়ি একদম পছন্দ করতাম না। বিয়ের পর প্রতিদিন শাড়ি পরতে আমার প্রায় ৪৫ মিনিট সময় লেগে যেত। আমি ভাবতাম আর আক্ষেপ করতাম, কবে আমার শাশুড়ি আমাকে শাড়ি ছেড়ে কুর্তি পরার অনুমতি দেবেন! কিন্তু সেই অনুমতি পাইনি। আর যত দিনে তিনি রাজি হলেন, তত দিনে আমি নিজেই শাড়ির প্রেমে পড়ে গেছি। আর সেখান থেকেই শুরু এই যাত্রা।’
তবে এই পথচলা ডলির জন্য খুব সহজ ছিল না। ডলি বলেন, ‘সমাজের চারপাশের মানুষের কাছ থেকে অনেক হতাশাজনক ও নেতিবাচক কথা শুনতে হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, এটি সময় নষ্ট ছাড়া আর কিছু নয়। এটি পাগলামি। শাড়ি পরিয়ে কোনো দিন আয় করা যায় না। আজ আমি সবাইকে ভুল প্রমাণ করে এখানে দাঁড়িয়ে।’
এখন ইনস্টাগ্রামে এই তারকার ফলোয়ার ১০ লাখ। আর ফেসবুকে ১৫ লাখ ফলোয়ার। ইনস্টাগ্রামে কোন শাড়ি কীভাবে পরতে হবে, এমন খুঁটিনাটি বিষয়ে টিউটোরিয়াল দেন। হাজার হাজার মানুষ দেখেন এবং তাঁকে অনুসরণ করেন। কিন্তু প্রথম যখন তিনি শাড়ি পরানোকে একটি শিল্প হিসেবে দেখার সাহস করেন, সেই ঘটনাটি ২০০৬ সালের। তখনো ইনস্টাগ্রামের জন্ম হয়নি।