আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পরেও দীর্ঘদিন খোলা ছিল ভারতে আফগানিস্তানের দূতাবাস। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তালেবান জমানার আগে ইসলামিক রিপাবলিক অব আফগানিস্তানের পাঠানো কূটনীতিকেরাই এতদিন ধরে ভারতে আফগান দূতাবাসটি চালাচ্ছিলেন।
এর আগে নভেম্বরে প্রথম তারা জানিয়েছিলেন, লোকসংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে তাদের পক্ষে আর দূতাবাস চালানো সম্ভব হচ্ছে না। শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে তারা জানিয়ে দিলেন, দূতাবাস বন্ধ করে ভবন ভারত সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হল। এবার ভারত ঠিক করবে, তারা কী চায়।
কেন দূতাবাস বন্ধ করা হচ্ছে, এ নিয়ে দীর্ঘ বক্তব্য জানিয়েছেন দূতাবাসের কর্মীরা। তাদের বক্তব্য, তালেবান সরকার গঠনের পরেও দীর্ঘ দুই বছর তিন মাস ভারতে দূতাবাস চালিয়েছেন পুরনো দূতাবাস কর্মীরা। আফগানিস্তান যারা পালিয়ে সে সময় ভারতে এসেছেন, তাদের সাহায্য করেছেন। কিন্তু বর্তমানে একটি কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট অথবা স্বার্থের দ্বন্দ্ব তৈরি হতে শুরু করেছে।
তাদের দাবি, ভারত সরকার আফগান দূতাবাসের পুরনো কর্মীদের ওপর আর ততটা ভরসা করছে না। তালেবানের পাঠানো নতুন কর্মীরা ভারতে আসতে শুরু করেছেন। তাদের সঙ্গে ভারতীয় প্রশাসন যোগাযোগ করতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে পুরনো কর্মীদের পক্ষে আর দূতাবাস চালানো সম্ভব নয়।
শুধু তা-ই নয়, গত দুই বছরে ভারতে বসবাসকারী আফগানদের একটা বড় অংশ অন্য দেশে চলে গেছে। ছাত্ররা অন্য দেশে পড়তে চলে গেছে। ফলে ভারতে অবস্থিত আফগানদের সংখ্যা অনেকটাই কমে গেছে বলে তাদের দাবি। নতুন করে তাদের সাহায্য করারও কিছু নেই।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যে সময় প্রয়োজন ছিল, সে সময় কোনো দিকে না তাকিয়ে সমস্ত সংকট উপেক্ষা করে আফগান শরণার্থীদের সাহায্য করার চেষ্টা হয়েছে। এখন সেই সংকট ফুরিয়েছে। ফলে দূতাবাসেরও কোনো প্রয়োজন নেই।
দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, অধিকাংশ দূতাবাস কর্মী অন্য দেশে চলে গেছেন। পুরনো কর্মী আর কেউই ভারতে নেই। ফলে দূতাবাস চালানোর লোকবল নেই। এবার ভারতকেই ঠিক করতে হবে দূতাবাস তারা কাদের হাতে তুলে দেবে। তালেবানের পাঠানো নতুন কর্মীদের হাতে?
সরকারিভাবে আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এখনো মেনে নেয়নি ভারত। তবে কূটনৈতিক তৃতীয় স্তরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি হয়েছে বলে কোনো কোনো মহলের দাবি। শুক্রবার আফগান দূতাবাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর দুপুর পর্যন্ত এবিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।