নাভালনি যে জেলে ছিলেন, সেখান থেকে তাকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু কোথায় নেয়া হয়েছে, তা জানা যায়নি। নাভালনির সহযোগীরা সোমবার (১১ ডিসেম্বর) জানিয়েছেন, গত ছয় দিন ধরে তারা নাভালনির খোঁজ পাচ্ছেন না। তাকে সম্ভবত আগের জেল থেকে সরিয়ে অন্য জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ বলেছেন, ‘গত বছরের মাঝামাঝি থেকে নাভালনিকে একটা জেলে রাখা হয়েছিল। সেখানকার কর্মীরা আইনজীবীদের জানিয়েছেন, নাভালনি আর সেখানে নেই। জেল কর্তৃপক্ষ এনিয়ে কিছুই জানাচ্ছেন না।’
২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে নাভালনিকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। চরমপন্থি কার্যকলাপের জন্য তাকে ১৯ বছরের কারদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাকে সবচেয়ে সুরক্ষিত জেলে রাখা হয়। এতদিন তাকে ভ্লাদিমির এলাকায় ছয় নম্বর পেনাল কলোনিতে রাখা হয়েছিল, যা মস্কো থেকে ২৯০ কিলোমিটার দূরে। নাভালনির বন্ধু ও সহযোগীরা মনে করেন, তাকে ভ্লাদিমির অঞ্চলের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার সহযোগী ভলকভের বক্তব্য, তাকে যে কোনো জায়গায় নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
রাশিয়ার প্রচুর জেল আছে, যেখানে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা রয়েছে। তার যে কোনো একটিতেই নাভালনিকে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। রাশিয়ার এই জেল ব্যবস্থা বিশাল বড়। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বন্দিদের নিয়ে যেতে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস পর্যন্ত লেগে যায়। যখন তাদের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তাদের সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয়া হয় না। নাভালনির সঙ্গে বাইরের দুনিয়ার সম্পর্ক গত কয়েক মাস খুবই কম ছিল। কারণ, বারবার তাকে আইসোলেশন সেলে রাখা হচ্ছিল।
নাভালনির কোনো খবর নেই বলে অ্যামেরিকা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, তারা এই ব্যাপারে কিছুই জানে না। জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি জানিয়েছেন, ‘নাভালনিকে নিয়ে যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, তাতে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। তার পরিবার বা মুখপাত্র কেউই জানে না, তিনি কোথায়। আমাদের দাবি, তাকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। তাকে এভাবে বন্দি করে রাখা যাবে না।’
নাভালনি হলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের কট্টর বিরোধী। তিনি ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-বিরোধী বিশাল প্রতিবাদের আয়োজন করেছিলেন। নাভালনিকে তিনটি অভিযোগ কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। সব অভিযোগই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন।