বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে একটি জাতি গঠনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেন সাংবাদিকরা। সমাজে ঘটে যাওয়া নানা অসংগতি তুলে ধরে অনেকের বিরাগভাজন হলেও সাংবাদিকদের মাধ্যমেই আসল সত্য সামনে চলে আসে। সাংবাদিকরা কাজ করেন সমাজের দর্পন হিসেবে। তাই এক্ষেত্রে বস্তুনিষ্টতা বজায় রাখা প্রতিটি সাংবাদিকের নৈতিক দায়িত্ব।
বাংলা প্রেসক্লাব বার্মিংহাম মিডল্যান্ডস এর অভিষেক অনুষ্ঠানে এসে এভাবেই নিজেদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন বার্মিংহামে বসবাসরত বাংলাদেশী কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ।
২০ নভেম্বর, সোমবার স্থানীয় বিয়া লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত জাঁকজমকপূর্ণ অভিষেক অনুষ্ঠানে বার্মিংহামবাসীর উপচেপড়া ভীড় ছিলো লক্ষনীয়। বিশাল হলে তিল ধারনের জায়গা ছিলো না। হল ভর্তি অতিথির উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান স্থল ছিলো মুখরিত। লাল-সবুজের ছোঁয়া ছিলো পুরো আয়োজন স্থলে।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্লাবের পুনঃনির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ মারুফ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাহিদুর রহমান সুহেল ও সহ সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ওয়াহিদ দুলাল। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বার্মিংহামে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার মোহাম্মদ আলীমুজ্জামান। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জামে মসজিদ এন্ড ইসলামিক সেন্টারের ছাত্র, ব্রিটিশ বাংলাদেশী তরুণ সায়েম আহমদ।
বিপিসির কার্যকরী পরিষদের (২০২৩-২০২৫) সদস্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সহ সভাপতি সৈয়দ নাসির আহমদ, কায়সারুল ইসলাম সুমন, ফারছু চৌধুরী, অর্গেনাইজিং সেক্রেটারী- আতিকুর রহমান ও সদস্য আহমেদ মুসলেহ। লন্ডন ও অন্যান্য শহর থেকে আগত সাংবাদিকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব এর নির্বাহি সদস্য আহাদ চৌধুরী বাবু, বাংলা টিভির ব্যুরো চীফ আব্দুল কাদির চৌধুরী মুরাদ, লিভারপুল বাংলা প্রেস ক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ চৌধুরী সাদী, এলবি২৪ এর এনাম চৌধুরী, নতুন দিন পত্রিকার পলি রহমান, লিবারপুল থেকে সাংবাদিক মো. আব্দুল আজাদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনটিভি ইউরোপের সিইও সাবরিনা হোসাইন, সাপ্তাহিক জনমত এর সম্পাদক, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাহাস পাশা, বার্মিংহামের প্রবীন মুরব্বী আলহাজ্ব নাসির আহমেদ, আজির উদ্দিন ও গোলাম মাহমুদ মিয়া।
স্বাগত বক্তব্যের পর শিল্পী ফজলুল বারি জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এ সময় হলভর্তি দর্শকবৃন্দ দাঁড়িয়ে শিল্পীর সাথে জাতীয় সঙ্গীতে অংশ নেন।
প্রধান অতিথি সহকারী হাইকমিশনার মো. আলীমুজ্জামান, প্রবীণ কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব নাসির আহমদ ও আজির উদ্দিন মঞ্চে উপবিষ্ট থেকে নবনির্বাচিত কার্যকরী পরিষদের সকল দায়িত্বশীলদের গলায় ব্যাজ পরিয়ে পরিচয় করিয়ে দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. আলীমুজ্জামান এই ক্লাবের সাংবাদিকদের মাধ্যমে বার্মিংহামের বাংলাদেশী কমিউনিটি আরো এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিপুল লোকসমাগমের কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন- এই সংগঠনের সাংবাদিকরা ভাল কাজ করেছেন বলেই আজকের এই উপস্থিতি। তিনি সাংবাদিকদের ভবিষ্যেতের ইঙ্গিত বর্তমানে দেয়ার বৈশিষ্ট্যের কথা বলেন। তিনি কমিউনিটির ভাল দিক এবং বিভিন্ন সমস্যার কথা গভীর পর্যালোচনার মাধ্যমে সামনে নিয়ে আসার আহ্বান জানান। এছাড়াও জনাব মো. আলীমুজ্জামানা সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের ইঙ্গিত এবং পরিবর্তিত বাংলাশের কথা সাহসের সাথে তুলে ধরার আহ্বান জানান। আয়োজনস্থলে লাল-সবুজের ছোঁয়ার কথা উল্লেখ করে হাইকমিশনার আরো বলেন- বাংলা প্রেসক্লাব বার্মিংহামের সাংবাদিকরা নিরপেক্ষ নন; আজকের অনুষ্ঠান প্রমান করেছে তাদের অবস্থান বাংলাদেশের পক্ষে।
স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ মারুফ বলেন- বিপিসি সুস্থ ধারায় নিছক সাংবাদিকতা চর্চার মাধ্যমে কমিউনিটির ভালবাসা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০১২ সালে গঠনের পর থেকে বিপিসি কার্যক্রম নিজেদের মধ্যে সীমিত রাখার কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন- বিপিসি সাংবাদিকদের বিরাজমান বিভাজন নিয়ে কখনো প্রকাশ্যে কথা বলেনি এমনকি কমিউনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানগুলো অন্যদের সাথে অত্যন্ত সৌহার্দের সাথে কাভার করা হয়ে থাকে । কমিউনিটিতে সাংবাদিকদের বিভাজনকেন্দ্রীক কোন বিভাজন তৈরি হোক এটা বিপিসি কখনো চায় না।
বিশেষ অতিথির বক্তবব্যে জনমত পত্রিকার সম্পাদক, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাহাস পাশা লন্ডনের বাইরেও সাংবাদিকরা যে ভাল কাজ করছেন তার দৃষ্টান্ত আজ বার্মিংহামে দেখলাম উল্লেখ করে বলেন- দলমত নির্বিশেষে উপস্থিতিতে বুঝা যায় এখানে যারা সাংবাদিকতা করছেন তাদের জনপ্রিয়তা আছে। তাদের প্রতি মানুষের ভালবাসা ও আস্থা আছে।
অনুষ্ঠানে স্থানিয় কাউন্সিলর, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন।
কাউন্সিলরদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জিয়াউল ইসলাম, মায়া আলী, সাবিনা মালিক বানু, জালাল উদ্দিন, ঝুমা বেগম, জুলিয়েট বার্কার স্মিথ। কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের মধ্যে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন- মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ, ড. আব্দুল খালিক, আব্দুল লতিফ জেপি, ফয়জুর রহমান চৌধুরী এমবিই, কামরুল হাসান চুনু, তাফাজ্জাল হোসেন চৌধুরী, এম এ রশিদ ভূইয়া, ফয়েজ উদ্দিন এমবিই, বশির মিয়া কাদির আব্দুল মালিক পারভেজ, সৈয়দ কফিল আহমদ, সৈয়দ আখতার হোসেন কিবরিয়া।
রাজনৈতক নেতৃবৃন্দের মধ্যে যাঁরা বক্তব্য ও উপস্থিত ছিলেন- কবির উদ্দিন, মাহবুব আলম চৌধুরী মাখন, সৈয়দ জমশেদ আলী, মাওলানা কাদির আল হাসান, জুনেদুর রহমান, সয়ফুল আলম, এনামুল হক খান নেপা, এনামুল হাসান সাবির, ওয়াসিমুজ্জামান, আবজার হোসেন, নুরুল ইসলাম কিসলু, হাসিব উদ্দিন মতিন, হাজী ফখরুল, রাজু আহমদ পারভেজ, এম রহমান দীপু, মুস্তাফিজুর রহমান সেলিম, ফয়সল আহমেদ, তাজুল ইসলাম, রহমত আলী, মোসাদ্দিক হোসেন শ্যামল, মকসুদ আহমেদ, মঈন চৌধুরী প্রমুখ।