এফ-১৬ যুদ্ধ বিমানের বিনিময়ে সুইডেনকে ন্যাটোর সদস্য পদ পেতে অনুমতি দেবে তুরস্ক। শুক্রবার মার্কিন কংগ্রেসকে এমনই শর্ত দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান।
এরদোয়ান শুক্রবার ফের বলেছেন, পার্লামেন্ট শুধু সুইডেনের বিষয়ে কাজ করবে যদি মার্কিন কংগ্রেস তুরস্ককে কয়েক ডজন এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ও খুচরা যন্ত্রাংশ কেনার অনুমতি দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বিষয়ে এরদোয়ান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা বলেছেন আপনাদের কংগ্রেসে বিল পাস হওয়ার পর এফ-১৬ ইস্যুতে পদক্ষেপ নেবেন। জেনে রাখেন, আমাদেরও সংসদ আছে। আমরা যদি ন্যাটোতে দুটি মিত্র দেশ হই, তাহলে আপনারাও একযোগে, সংহতির সঙ্গে আপনার দিক থেকে যা করতে পারেন, আমরাও তা আমাদের সংসদের দিক থেকে করতে পারি।’
সুইডেন ও ফিনল্যান্ড কয়েক দশকের সামরিক নিরপেক্ষতা প্রত্যাহার করে গত বছর ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের কাছে পারমাণবিক সুরক্ষা চেয়েছিল। দেশ দুটির আবেদন তুরস্ক ও হাঙ্গেরি ছাড়া ন্যাটোর বাকি সদস্যরা অনুমোদন করেছে।
তবে তুরস্ক ও হাঙ্গেরির সমর্থনের পর চলতি বছরেই ফিনল্যান্ডকে ৩১তম সদস্য হিসেবে ন্যাটোতে গ্রহণ করা হয়েছে।
তুরস্কের আশপাশে সক্রিয় কুর্দি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে স্টকহোম পদক্ষেপ নেওয়ার পরে জুলাই মাসে এরদোয়ান সুইডেনের সদস্যপদ নিয়ে তার আপত্তি তুলে নেন। কারণ কুর্দী গোষ্ঠীদের সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করে তুরস্ক।
কিন্তু তুরস্কের পার্লামেন্টের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি এ বিষয়ে গত মাসে পূর্ণ চেম্বারে ভোটের আবেদন পাঠাতে দেরি করে। ঘটনাটিকে কঠোরভাবে তিরস্কার করেন ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ।
২০১৯ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন এফ-৩৫ যৌথ স্ট্রাইক ফাইটার প্রোগ্রাম থেকে আঙ্কারার বহিষ্কারের কারণে তুরস্কের পুরাতান বিমান বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরদোয়ান আধুনিক রুশ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে চেয়েছিলেন। যার কারণে তুরস্কের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে এমনটা করেছে ওয়াশিংটন।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ২০ বিলিয়ন ডলারের এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান বিক্রির চুক্তি এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বারবার। কিন্তু কংগ্রেসের নেতারা এই চুক্তির অনুমতি দিতে প্রতিবারই বাধা দিয়েছেন। তারা তুরস্কের মানবাধিকার রেকর্ড ও ন্যাটো সদস্য গ্রিসের সঙ্গে অতীতের স্থবিরতা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ায় ওয়াশিংটনের প্রতি তুরস্কের ক্ষোভের কারণে বিষয়টি আরও জটিল হয়েছে। এরদোয়ান শুক্রবার বলেছেন, জো বাইডেনের সঙ্গে শিগগিরই দেখা করার কোনো ইচ্ছা তার নেই।
তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বিডেনের সঙ্গে বৈঠক আমাদের এজেন্ডায় নেই। গাজা নিয়ে তাদের অবস্থান আপনাদের সবারই জানা। যদি তিনি আমাদেরকে ফোন করেন, আমরা তার সঙ্গে দেখা করব ও আমাদের যা নিয়ে কথা বলার সেটা নিয়েই কথা বলব।’
সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত সপ্তাহে বলেছিলেন, তুর্কি প্রতিপক্ষ তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে আঙ্কারা সপ্তাহের মধ্যে ন্যাটোতে স্টকহোমের সদস্যপদ অনুমোদন করবে। কিন্তু তুরস্কের পার্লামেন্টের পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটি এখনও এই প্রস্তাবের ওপর শুনানির সময় নির্ধারণ করেনি।
সূত্র: এএফপি