ফিলিপাইনের পালাওয়ান দ্বীপের উপকূলে নোঙর করেছে চীনের ১৩৫টি জাহাজ। প্রাচীরের মতো সারি সারি করে রাখা এসব জাহাজের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ম্যানিলা।
রোববার উপকূলরক্ষীরা জানিয়েছে, পালাওয়ান দ্বীপের প্রায় ৩২০ কিলোমিটার পশ্চিমে বুমেরাং-আকৃতির হুইটসুন রিফের মধ্যে চীনা জাহাজগুলো এলোমেলো করে রাখা ছিল। দ্বীপটিকে জুলিয়ান ফেলিপ রিফ বলে ডাকে ফিলিপাইন।
চীনের দ্বীপ প্রদেশ হাইনান থেকে হুইটসান রিফ ১ হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরে অবস্থিত। ফিলিপাইন বলেছে, তারা ১৩ নভেম্বর ১১১টি ‘চাইনিজ মেরিটাইম মিলিশিয়া ভেসেল’ (সিএমএম) গুণেছে। শনিবার যখন উপকূলরক্ষীরা এই এলাকায় দুটি টহল বোট মোতায়েন করেছিল তখন এই সংখ্যাটি ১৩৫ ছাড়িয়েছে।
ম্যানিলার উপকূলরক্ষী বলেছেন, ‘ফিলিপাইন কোস্ট গার্ড থেকে চীনা জাহাজগুলোর উদ্দেশে জারি করা সতর্কবার্তার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বরং তারা জুলিয়ান রিফে জাহাজের সংখ্যা আরও বাড়িয়েছে। এদের উপস্থিতি অবৈধ ও শঙ্কাজনক।
ম্যানিলায় চীনা দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।
বেইজিং তার প্রতিবেশীদের উপকূলের কাছাকাছি সমুদ্র ও দ্বীপসহ দক্ষিণ চীন সাগরের বেশিরভাগ অংশের মালিকানা দাবি করে। দেশটি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তকেও উপেক্ষা করেছে। এমনকি সমুদ্রে টহল দেওয়ার জন্য নিয়মিত তারা জাহাজ মোতায়েন করে। নিজেদের অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য কৃত্রিম দ্বীপ ও সামরিক স্থাপনাও তৈরি করেছে বেইজিং।
ফিলিপাইন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামও সমুদ্রের বিভিন্ন দ্বীপ এবং প্রাচীরের মালিকানা দাবি করে। এসব অঞ্চলের পানির নিচে পেট্রোলিয়ামের মজুদ রয়েছে বলে মনে করা হয়।
উপকূলরক্ষী রোববার ছবি প্রকাশ করে বলেছে চীনা জাহাজগুলো সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ও পানির আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
২০২১ সালে ২০০টির বেশি চীনা জাহাজ মোতায়েনের মাধ্যমে ম্যানিলা ও বেইজিংয়ের মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তখন ম্যানিলা জোর দিয়েছিল যে ফিলিপাইনের একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলে তাদের অনুপ্রবেশ বেআইনি। তবে চীন বলেছে, তারা বৈরি আবহাওয়ার সময় মাছ ধরার নৌকাগুলোকে আশ্রয় দিয়েছিল।
এদিকে চীনা জাহাজের ওপর নজরদারি বাড়াতে দক্ষিণ চীন সাগরের সবচেয়ে বড় দ্বীপে একটি কোস্ট গার্ড স্টেশন স্থাপন করার ঘোষণা করেছে ফিলিপাইন।
তথ্য সূত্র: এএফপি