Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeঅন্যান্যঘরের সাজসজ্জায় বেত

ঘরের সাজসজ্জায় বেত

একটি ঘরের পরিবেশ, আসবাবপত্রই বলে দেয় সে ঘরের মানুষদের মানসিকতা কেমন। তাইতো আজকাল সবাই ছুটছে কিভাবে আলাদাভাবে ঘর সাজানো যায়। কেউ কেউ তো লাখ-লাখ টাকা খরচ করে ফেলেন শুধুমাত্র ঘর সাজানোর জন্য। নামি-দামি ডিজাইনার এনে ঘর ডেকোরেশন করেন। অনেকে আবার নিজেদর মনের মাধুর্য মিশিয়েই ঘর সাজানোর কাজটি সেরে ফেলেন।

ঘর সাজানোর জন্য একেকজনের পছন্দ হয় একেক রকম। কারো পছন্দ থাকে কাঠের কারুকাজ করা আসবাব, কেউ প্রাধান্য দেন মেটাল ফ্রেমের আসবাব। অন্যদিকে কারো জন্য বাঁশ বা বেতের আসবাব থাকে পছন্দের তালিকার শীর্ষে। যারা সাধারণ কিন্তু নান্দনিক ডিজাইনের আসবাব পছন্দ করেন, তারা বেতের সাধারণ বুনন বেছে নিতে পারেন ঘর সাজানোর মাধ্যম হিসেবে।

আজকাল বেতের আসবাবের চাহিদাও বাড়ছে। বেতের আসবাবপত্রের সৌন্দর্য এতটাই দারুণ হয় যে, পুরো বাসার জন্য না হলেও নির্দিষ্ট কোন রুমের জন্য বা অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ঘরের কোন কর্নার বা দেয়াল সাজানোর জন্য বেত বেছে নেন অনেকেই। আজকাল বেতের সবধরনের আসবাবপত্রই পাওয়া যাচ্ছে।

যেমন- বেতের ফ্রেম করা আয়না, ইনডোর প্ল্যান্টস এর জন্য বেতের ঝুড়ি, বেতের মোড়া, সোফা, প্ল্যান্ট শেলফ, বেতের দোলনা কি নেই। তাই তো পুরো ঘর চাইলেই বেতের আসবাবপত্রে সাজাতে পারেন।

বেতের বিছানা
শোবার ঘর সাজাতে কিনতে পারেন বেতের বিছানা। কাঠের কিংবা মেটালের বিছানা তো সবাই ব্যবহার করে আপনি নাহয় শোবার ঘরে প্রকৃতির ছোঁয়াই রাখলেন। বেতেরও বিভিন্ন ডিজাইনের খাট দোকানে পাবেন। চাইলে কাস্টমাইজ করেও নিতে পারেন।

বেতের সেলফ
বিছানার সঙ্গে মিল রেখে বেতের শেলফ নিতে পারেন । আপনি ছোট ছোট প্ল্যান্টস, বই কিংবা ফটোফ্রেম রাখতে পারেন বেতের এই শেলফে। এমনকি এই শেলফে কসমেটিকস রেখে তা ড্রেসিং টেবিল এর মতোও ব্যবহার করতে পারেন।

বেতের সোফা
ড্রইং রুমের জন্য বেছে নিতে পারেন বেতের সোফা। বেতের যেকোনো আসবাব ঘরকে সাধারণের মধ্যেও নান্দনিক করে তুলবে। যারা ঘরে আভিজাত্যের বদলে প্রকৃতির ছোঁয়া ধরে রাখতে চান তারা নিঃসন্দেহে ঘরে বেতের আসবাব ব্যবহার করতে পারেন। বেতের সোফা-সেটও হতে পারে বিভিন্ন ডিজাইনের। আপনার রুমের সাইজ ও পরিবেশ অনুযায়ী গোলাকৃতির অথবা গতানুগতিক চেয়ার এর মতো যেকোনো ডিজাইনের সোফা রাখতে পারেন। বেতের ডিভান সোফাও কিন্তু পাওয়া যায়। যা ড্রয়িং রুমেও রাখতে পারেন চাইলে বেডরুমেও রাখতে পারেন।

বেতের ঝুড়ি
ইনডোর প্ল্যান্টস রাখতে প্লাস্টিকের পাত্র, মাটির টব এর ব্যবহার তো হরহামেশাই করা হয়। তবে নতুনত্ব হিসেবে বেতের ঝুড়িতে ইনডোর প্ল্যান্টস রাখতে পারেন। বেতের ঝুড়ি বিভিন্ন আকারের পাওয়া যায়। তবে আকার-আকৃতি ভেদে ঘরের বিভিন্ন প্রয়োজনেও বেতের ঝুড়ি ব্যবহার করা যায়। হোম অরগানাইজার হিসেবে বেতের ঝুড়ি একারণেই বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ছোট কোন স্পেসেও বেতের এই ঝুড়িগুলো বেশ ভালোভাবেই জায়গা করে নেয়। আর এ কারণেই রুমে এলোমেলো হয়ে পড়ে থাকা কাপড়, খেলনা, বই অথবা অন্যান্য যেকোনো জিনিস গুছিয়ে রাখার জন্য বেতের এই ঝুড়িগুলো এককথায় সেরা।

বেতের মোড়া এবং টেবিল
একটা সময় ছিল যখন অনেকেই ঘরে বেতের মোড়া ব্যবহার করতো। লিভিং রুম থেকে শুরু করে বারান্দা, অনেক জায়গায়তেই রাখা হতো ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের মোড়া। সময়ের পালাক্রমে প্লাস্টিক, কাঠ ইত্যাদির ব্যবহার বেড়ে গেলেও, বেতের মোড়া এবং টেবিল এর সৌন্দর্য এখনও আগের মতোই আছে। ঘরে শৈল্পিক একটা ভাব ধরে রাখতে এবং ইউনিক ইন্টেরিয়রে ঘর ডিজাইন করতে বেতের মোড়া এবং টেবিল দিয়ে ঘরের যেকোনো কর্নার সাজিয়ে নিতে পারেন খুব সহজে।

বেতের আর্মচেয়ার
আপনার বেডরুমের কর্নারে রাখতে পারেন বেতের আর্মচেয়ার। মেটাল বা কাঠের মতো বেতের আর্মচেয়ারও বেশ সহজলভ্য। ডিজাইন ভেদে আর্মচেয়ার অনেক ধরনের হয়ে থাকে। গোলাকৃতি, চারকোণা কিংবা উঁচু চেয়ার স্টাইল। সাধারণত এ ধরনের আর্মচেয়ারে গদি ব্যবহৃত হয়। আর তাই আর্মচেয়ারটি দেখতে আরও সুন্দর করে তুলতে রঙিন ফেব্রিকের গদি বা কুশন ব্যবহার করতে পারেন।

বারান্দায় বেতের দোলনা
গান শুনতে শুনতে বিশ্রাম করার জন্য কিংবা এক কাপ চা হাতে গল্প-আড্ডায় সময় কাটাতে অনেকেই শখের বসে বারান্দায় দোলনার ব্যবস্থা করেন। আবার অনেকেই কর্মব্যস্ত দিনশেষে একান্তে কিছু সময় কাটাতে পছন্দ করেন, সেক্ষেত্রে বেতের এই দোলনা গুলো বেশ সুন্দর। অনেকে ঘরের কর্নারেও দোলনা রাখতে পছন্দ করেন। বেতের দোলনার মধ্যে কাপড়ের গদি বা রঙিন কুশন ব্যবহার করে এর আশেপাশে ইনডোর প্ল্যান্টস দিয়ে কর্নারটি সাজালে তা দেখতে চমৎকার দেখাবে। চাইলে বেতের দোলনাটি পছন্দের কোন রঙে পেইন্ট করে নিতে পারেন। দেখতে বেশ ইউনিক দেখাবে।

অনেকেই হয়তোবা নতুন সংসার সাজানোর জন্য মাথায় একরাশ চিন্তা নিয়ে ঘুরছেন। কিভাবে ইউনিকভাবে নতুন সংসার সাজানো যায়। তারা আর দেরী না করে বেতের তৈরি আসবাবপত্রে ভরসা করতে পারেন এখনই।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments