Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeনিউইয়র্ক নিউজসন্দ্বীপের মানুষই বাংলাদেশ: স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ

সন্দ্বীপের মানুষই বাংলাদেশ: স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ

বাংলাদেশের দ্বীপ জনপদ সন্দ্বীপের মানুষের প্রবাসী কমিউনিটি সংগঠন সন্দ্বীপ সোসাইটি ইউএসএ ইনক্ বিশ্বে বাংলাদেশিদের আঞ্চলিক কমিউনিটি সংগঠনের মধ্যে সর্ববৃহৎ। যার সদস্য সংখ্যা পাঁচ হাজারেরও বেশি। সম্প্রতি উৎসবমুখর পরিবেশে এই সংগনের নির্বাচনে ফিরোজ আলমগীর পরিষদ পূর্ন প্যানেলে জয়লাভ করেছে। নির্বাচন পরবর্তী সংবর্ধনা ও নৈশভোজ অনুষ্ঠানে সন্দ্বীপের সূর্যসন্তান গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডর স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশিদের বহু সংগঠনের শহর নিউইয়র্কে গত ত্রিশ বছরে অনেক নির্বাচন দেখেছি, বাংলাদেশ জন্মের থেকে এ পযর্ন্ত সবকটি নির্বাচন দেখেছি ও অংশগ্রহণ করেছি। কিন্তু সন্দ্বীপ সোসাইটির এবারের নির্বাচন সকল বিবেচনায় সব নির্বাচনের চেয়ে আলাদা। সবচেয়ে সুশৃঙ্খল, উৎসবমুখর ও সমন্বিত। গণতন্ত্র অনুশীলনের প্রশ্নে এই নির্বাচন এক দৃষ্টান্ত। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মনে হয়েছে আমার প্রিয় ভাই-বোন বংশধরেরা একটি শুধু সন্দ্বীপের মানুষ নন, তারাই বাংলাদেশ। এই নির্বাচনে বিজয়ী ও বিজিত সবার মধ্যে যে আন্তরিকতা, ভাতৃত্ব ও একতাবদ্ধ থাকার প্রত্যয় দেখেছি, তা সত্যিই বিরল। এই নির্বাচন সবার জন্যই অনুসরনীয়।

তিনি বলেন, এই বছরে জয় বাংলাদেশ’ শ্লোগান সৃষ্টি করেছি। গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার চেতনার ভিত্তি হবে এই ‘জয় বাংলাদেশ’। এখানে আজ যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা বাল্যবেলা থেকে আমার অনুসারি। তাদের আমি শিখিয়েছি আদব কায়দা অনুশীলন। নিবিড়ভাবে তাদের গড়ে ওঠার পথে ভূমিকা রাখতে পেরে আমারও ভালো লাগছে। তাদের প্রত্যেকের মধ্যেই অসাধারণ নেতৃত্বের উজ্জলতা রয়েছে। আগামীর পথচলায় প্রত্যেককেই দরকার হবে। আপনারা তৈরি থাকুন, একতাবদ্ধ থাকুন।

সন্দ্বীপ সোসাইটির নব নির্বাচিত সভাপতি ফিরোজ আহমেদের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সন্দ্বীপ প্রবাসী গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ। উপস্থিতি ছিল আড়াই হাজার মানুষের। অনুষ্ঠানে সন্দ্বীপ সোসাইটির নব নির্বাচিত সকল কর্মকর্তা সদস্যকে ফুল দিয়ে অভিনন্দিত করা হয়। অনুষ্ঠানে ছিল এক প্রীতি নৈশভোজের আয়োজন। উপস্থিত সকল ব্যক্তিবর্গ প্রীতিভোজে অংশ নেন।

এই অনুষ্ঠানের পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক প্রতিক্রিয়া লিখেছেন স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ। তিনি লিখেছেন, “কনি আইল্যান্ড এভিনিউ সন্দ্বীপ সোসাইটির অনুষ্ঠানে প্রায় ৬শত মহিলার উপস্থিতি। গত সপ্তাহে ওজন পার্কে এরকম সংখ্যক আরেকটি আয়োজনের পর সবাই একত্রিত হয়েছেন এই পারিবারিক দাওয়াতে। এতো গভীর আন্তরিক বন্ধন বাংলাদেশের একটা দ্বীপের মানুষের। যুগ যুগ ধরে চলে আসা পারিবারিক সামাজিক সম্পর্কের এই ধারা রক্ষার ঘটনা দেশে দেশে উল্লেখযোগ্য বিপ্লবগুলোকেও তাক লাগিয়েছে। সমাজ গবেষকদের জন্য এটি এক দৃষ্টান্ত, এক অনন্য উপাত্ত নির্দেশনা। আমি আবু জাফর মাহমুদ এই বন্ধনেরই প্রত্যক্ষ অংশীদার।

সন্দ্বীপের দিলাল রাজা (দেলোয়ার খা)র নাম বৃটিশের ক্রীতদাসদের বংশধরদের স্মরণে নাও থাকতে পারে। এই দ্বীপে জন্ম পাওয়ার দায় আমার। আমি এই উত্তাল শক্তির শেকড় সন্ধান করে করে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে দামী খনিজ অঞ্চলের মর্যাদার উষ্ণতার মধ্যে নিজেকে দেখতে পাই। বিশাল সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে মঞ্চে এবং সমগ্র অতিথিশালায় উপস্থিতি, ক্রমাগত আসা যাওয়ায় থাকা বলিষ্ঠ, উদ্দীপ্ত, দৃঢ়চেতা এবং অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ এই মানুষদের প্রাণবন্ত সম্বর্ধনা এবং তাদের উচ্ছ্বাসমাখা দৃষ্টির ভেতর আমাদের ইতিহাসের রাজাকে দেখতে পাই।

ভাবনার আটলান্টিকে প্রবাহমান সুউচ্চ তরংগমালার স্রোতের উপর হাসতে হাসতে অভিনন্দিত করবার এক দীর্ঘ মুহুর্ত অনুভব করছিলাম। তারই সাথে চোখে চোখে ভাব বিনিময় করতে করতে এক অপার্থিব ভাবনায় ডুবেছিলাম। এই মহেন্দ্রক্ষণ ছিলো মঞ্চে ফুলের তোড়া গ্রহণের সময় জুড়ে উপস্থিত অসংখ্য আপনজনদের স্পন্দিত উচ্ছ্বাস প্রকাশকাল।

আই সেল্যুট রাজা দিলাল। আপনার আকাঙ্ক্ষাই আমরা বহন করে চলেছি। হে আমাদের পুর্বপুরুষ! অচিরেই আমরা গ্রহণ করে নেবো আপনার স্বপ্নের মুকূট, বর্তমান দুনিয়ার সর্বোচ্চশক্তির মর্যাদাবান স্বীকৃতি। প্রতিজ্ঞার সাথে আপনি যেমন সম্পর্কচ্ছেদ করেননি। জীবন ত্যাগেও বিচলিত ছিলেন না। আপনার এই বংশধররাও একনিষ্ঠ ঈমানদার। আমরাও মহাপরাক্রমশালীর কাছে দেয়া প্রতিজ্ঞায় অটল এবং নির্ভীক। সোসাইটির সকল উদ্যোক্তা, সংগঠক, সবসময়ের নেতৃত্ব এবং অভিষিক্ত নেতৃত্বকে আমার অভিনন্দন এবং ভালোবাসা। জন্মের পর আকাশ আর সমুদ্র দেখে দেখে যাদের বেড়ে ওঠা, এই আমরা, নিশ্চয়ই আল্লাহর ইচ্ছায় একত্রিত হয়েছি এক সামাজিক দায়িত্ববোধের ধারায়। আমাদের এই মিলন এবং পারস্পরিক ভালোবাসা বিনিময় অবিলম্বে সূদুরপ্রসারী দীর্ঘ পথযাত্রায় যুক্ত করে নেবে।

অনুষ্ঠানের উপস্থাপক আমার স্নেহধন্য ছোটভাই (খালাতো ভাই) বাংলাদেশের কৃতিসন্তান এস এম ফেরদাউস নির্বাচিত প্রতিনিধিদের যোদ্ধা ও সৈনিক সম্বোধন করেছে। সেসময় আমার দৃষ্টি ছিলো সকলের স্বাভাবিক উদ্যমী চেহারায়। যেকোন চ্যালেঞ্জ নিতে সদাপ্রস্তুত আজন্ম সৈনিকের আকারে আকৃতিতে। তারও আগে উপস্থাপক আমার স্নেহধন্য ছোট ভাই (মামাতো ভাই) ওয়ালিদুল ইসলাম নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পরিচিত করে দিয়েছেন সবার সঙ্গে।

এযাবৎকালের সকল আয়োজক, পৃষ্ঠপোষক এবং কার্যকর সংঠকদের মধ্যে উপস্থিত সকলকে দ্রুতগতিতে কম সময়ের মধ্যে যেভাবে সম্বোধন করেছে তাতে নিজেদের ভেতরে গড়ে তোলা সংহতি এবং বন্ধনের গভীরতা বুঝে নিতে সহজ হয়েছে। সকলেই বাংলাদেশে গ্রামের বাড়ির পরিচয়সহই আমার চেনাজানা। সকলকে আমার প্রানভরা অভিনন্দন। তোমাদের একতায়, স্পিরিটে, সফলতায়, কীর্তিতে এবং সম্ভাবনায় আমি আমার তারুণ্যের সাথে বর্তমানের অসাধারণ যোগসুত্র পেয়েছি। আমি কল্পনাতীত সমৃদ্ধ হয়েছি তুলনাহীন এক মহাশক্তিতে। হে আল্লাহ আপনি আমাদের একমুখী থাকার প্রার্থনা কবুল করুন।”

অনুষ্ঠানে সভাপতি সন্দ্বীপ সোসাইটির নির্বাচনে যারা সর্বাত্মক সহায়তা করেছেন তাদের নাম ঘোষণা করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাদের মধ্যে ছিলেন, ওয়ালিদুল ইসলাম, মোরশেদুল ইসলাম, এস এম ফেরদৌস, সাইফুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান, ফখরুল ইসলাম, মোদাচ্ছের মিয়া, আব্দুল ওয়াদুদ, জনাব বাহার, গোলাম মাহমুদ, মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, লুৎফুল করীম, রফিকুল মওলা, ফোরকান উদ্দিন, ফজলুল করীম, ওমর ফারুক, আবু তাহের, জামালউদ্দিন, ওসমান গণি, আব্দুল মান্নান, ইঞ্জিনিয়ার রাফি, স্বাগত জুয়েল, সাইফুল আলম, সাফায়েত হোসেন, এম মনোয়ার সুজন, প্রফেসর ইসমাইল হোসেন, জামসেদ মেম্বার, মোশারফ হোসেন জসিম প্রমুখ।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments