হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান গাজা যুদ্ধ এবং ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশে আলোচনার জন্য সৌদি আরবের যুবরাজের সঙ্গে দেখা করেছেন।
ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) বুধবার সুলিভানকে তার মধ্যপ্রাচ্য সফরে এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব জোরদার করতে আতিথেয়তা করেছিলেন।
মার্কিন এই কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও যুদ্ধ মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার জন্য ইসরায়েলে যাবেন। কারণ প্রেসিডেন্ট বাইডেন সতর্ক করে বলেছিলেন, ইসরায়েল গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ‘নির্বিচারে বোমাবর্ষণের’ জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন হারানোর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সুলিভান ও এমবিএস ‘ইসরায়েল-ফিলিস্তিনিদের মধ্যে স্থায়ী ও টেকসই শান্তির জন্য নতুন পরিস্থিতি তৈরির চলমান প্রচেষ্টাসহ বহু দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা গাজার মানবিক প্রতিক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন। এর মধ্যে কীভাবে অবরুদ্ধ ছিটমহলে গুরুত্বপূর্ণ সাহায্যের প্রবাহ বাড়ানো যায় এ বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এর আগে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছিলেন, সুলিভান লোহিত সাগরে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক জাহাজের বিরুদ্ধে হুথিদের হামলা ঠেকাতে সৌদির প্রচেষ্টা নিয়েও আলোচনা করবেন।
দুই দেশের কর্মকর্তারা ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সম্ভাবনাও পুনর্বিবেচনা করেছেন। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা ও পরবর্তী ইসরায়েলি পাল্টা আক্রমণের কারণে এই আলোচনা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। উভয় পক্ষই বলেছে, তারা সঠিক সময়ে চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করতে চায়।
সুলিভান ও এমবিএস ওপেন রেডিও অ্যাক্সেস (ও-রান) নেটওয়ার্কসহ নিরাপত্তা, বাণিজ্য, মহাকাশ অনুসন্ধান এবং উন্নত প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও গভীর করার ক্ষেত্র নিয়েও আলোচনা করেছেন।
মার্কিন-ইসরায়েল সম্পর্ক
গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলের নির্বিচারে বোমা হামলার বিষয়ে মঙ্গলবার বাইডেনের তীক্ষ্ণ মন্তব্যের পরে বৃহস্পতিবার ইসরায়েল সফরে আসলেন সুলিভান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি রাজনৈতিক তহবিল সংগ্রহের সময় বাইডেন বলেছেন, ‘(ইসরায়েল) বিশ্বের বেশিরভাগই তাদের সমর্থন করেছে। (কিন্তু) তারা নির্বিচারে বোমা হামলার কারণে সেই সমর্থন হারাতে শুরু করেছে।’
তিনি আরও বলেছিলেন, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে ইসরায়েল ‘অস্বীকার করতে পারে না’। নেতানিয়াহুর সরকারসহ ইসরায়েলি কট্টরপন্থীরা এই রাষ্ট্রের বিরোধিতা করেছে।
ওয়াশিংটন কয়েক সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলকে গাজায় বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এড়াতে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছে। এতে অনেক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেছেন, সুলিভান হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে তাদের হামলার বিষয়ে আরও সুনির্দিষ্ট হওয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে ইসরায়েলিদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ১৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও প্রায় ৫০ হাজার আহত হয়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা