মুয়াজ্জিন সাহেবদের সুমধুর কণ্ঠে আজান শুনেই আমরা নামাজের প্রস্তুতি গ্রহণ করি। মনের ভেতর বিরাজ করে অচেনা এক কোমল শান্তি। দূর হয়ে যায় ক্লান্তি। শুধু আজানের সুমিষ্ট সুর শুনেই ইসলামের ছায়াতলে এসেছেন হাজারো মানুষ। আমরা মুসলিম, আজান শুনেই ঘুম ভাঙে আমাদের। আজানের সুরেই সূর্য ওঠে আবার ডোবে।
যিনি আজান দেন তাকে আমরা মুয়াজ্জিন বলি আর মুয়াজ্জিন সাহেবদের অনেক সম্মান ও মর্যাদা রয়েছে। কিয়ামতের দিন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা মুয়াজ্জিনদের অফুরন্ত নিয়ামত দান করবেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই মুয়াজ্জিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। হাদিসে বর্ণিত আছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত মুহাম্মদ (সা.) এরশাদ করেছেন, মুয়াজ্জিনের গুনাহ ঐ পর্যন্ত মাফ করে দেওয়া হয়, যে পর্যন্ত তার আজানের আওয়াজ পৌঁছে। (অর্থাৎ যদি এত দূর পর্যন্ত জায়গা তার গুনাহ দ্বারা পূর্ণ হয় তবুও তার সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।) প্রত্যেক প্রাণী ও নিষ্প্রাণ যারা মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাবে, সবাই তার জন্য সাক্ষ্য দেবে। মুয়াজ্জিনের আজান শুনে যারা নামাজ পড়তে আসেন, তাদের সওয়াব ২৫ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এক নামাজ থেকে গত নামাজের মধ্যবর্তী সময়ের সব গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয় (আবু দাউদ শরিফ : ৫১৫)।
হজরত মুয়াবিয়া (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, কেয়ামতের দিন মুয়াজ্জিনরা সর্বাপেক্ষা দীর্ঘ ঘাড় বিশিষ্ট হবেন (সহিহ মুসলিম)। এছাড়া হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত; নবি করিম (সা.) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ১২ বছর আজান দিয়েছে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে গেছে। তার জন্য প্রত্যেক আজানের বিনিময়ে ৬০ নেকি লেখা হয় এবং প্রত্যেক একামতের বিনিময়ে ৩০ নেকি লেখা হয় (মুসতাদরাকে হাকেম)। তাই আসুন, মুয়াজ্জিনের মতো সম্মানিত ব্যক্তিকে আমরা আরো সম্মান দেওয়ার চেষ্টা করি। তাদের সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তুলি।