শীতের হিমেল হাওয়ায় বিকাল বা সন্ধ্যার নাস্তায় একবাটি গরম স্যুপ হলে আর কী চাই। স্যুপ মানেই যে শুধু ডিম বা মাংসের তৈরি তা কিন্তু নয়। স্বাস্থ্যকর নাস্তা হিসেবে ভেজিটেবল স্যুপ হতে পারে আপনার শীতের প্রথম পছন্দ। শুধু স্বাদই নয় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও এটি কার্যকর। এই সময়টায় শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক কমবেশি সব মানুষের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যেমন সর্দি, জ্বর, গলা ব্যথা ও কাশির সমস্যা দেখা দেয় ঘরে ঘরে।
আবহাওয়ার এই পরিবর্তন আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আপনাকে খেতে হবে কিছু সবজি।
ব্রকলি
ব্রকলি শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভীষণ কার্যকর। ব্রকলিতে রয়েছে উচ্চমাত্রার গ্লুকোরাফানিন। হজমের সময় যা সালফোরাফেন নামের শক্তিশালী অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে রূপান্তরিত। এতে ফাইবার, প্রোটিন এবং পটাসিয়ামের মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদানও আছে। আধা কাপ ব্রকলি সারা দিনের ভিটামিন সির চাহিদার প্রায় ৮৪ শতাংশ পূরণ করার ক্ষমতা রাখে। এটি ভিটামিন কে, সি, ফোলেট এবং ফাইবারের মতো পুষ্টিতে পরিপূর্ণ, যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে এবং স্বাস্থ্যকর পাচনতন্ত্র বজায় রাখতে সহায়তা করে। বলা হয়, ১০০ গ্রাম ব্রকলিতে ৮৯ দশমিক ২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে।
টমেটো
শীতে জনপ্রিয় একটি সবজি টমেটো। তরকারি থেকে শুরু করে সালাদ এর আধিপত্য সব জায়গায়। এটি যে শুধু খেতেই দারুন মজার তা নয়, এর রয়েছে নানা পুষ্টিগুণ। এটি ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ হওয়ায় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারি। এতে রয়েছে ভিটামিন সি। টমেটোয় ক্রোমিয়াম পাওয়া যায় যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে। অনেকে সর্দি-কাশির ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে টমেটো স্যুপ ব্যবহার করে। আসলে, এর ভিটামিন সি ও ক্যারোটিনয়েড উপাদান আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে।
গবেষণায় দেখা যায় যে, ভিটামিন সি সর্দি প্রতিরোধ করতে এবং ঠান্ডা উপসর্গের সময় তীব্রতা কমাতে সাহায্য করতে পারে। গবেষণা আরও বলছে, একটি মাঝারি আকারের টমেটো দৈনিক চাহিদার প্রায় ২৮ শতাংশ ভিটামিন সি’য়ের চাহিদা পূরণ করে। এতে পটাসিয়াম, ভিটামিন বি, ই এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আমরা প্রায়ই টমেটোকে সবজি হিসাবে ব্যবহার করি, যদিও টমেটো কাঁচাও খাওয়া যায়। রক্তস্বল্পতা দূর করতে টমেটো খুবই কার্যকরী। টমেটোয় থাকা আয়রন, ভিটামিন সি এবং লাইকোপেন রক্তস্বল্পতাসহ নানা রোগের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করতে সক্ষম।
পালং শাক
যারা স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিশেষ সচেতন, তারা শাক দিয়ে তৈরি স্যুপের প্রতি আকৃষ্ট হতেই পারেন। এটি শীতে সবচেয়ে বেশি খাওয়া হয় কারণ এর রয়েছে অসংখ্য স্বাস্থ্য গুণ। পুষ্টিবিদরা একে সুপার ফুড হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। পালং শাক বাড়ায় ইমিউনিটি পাওয়ার। এই ঋতুতে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চান, তাহলে শাক-সবজিকে আপনার খাদ্যের নিয়মিত অংশ করে নিন। পালং শাকে প্রচুর ভিটামিন এ, বি, সি, ই, কে, জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রন রয়েছে। এটি রোগ প্রতিরোধ উন্নত করতে, হাড়কে শক্তিশালী করতে এবং হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে ।