ধরা যাক, ব্যস্তসমস্ত হয়ে মেট্রো স্টেশনে পৌঁছালেন আপনি। কাঙ্ক্ষিত স্টেশনের টিকিট কেটে মেট্রোতে উঠতে যাবেন। এমন সময় দেখলেন, টিকিট গেটে বসে আছে এক বিড়াল। তার দেহভঙ্গিই বলে দিচ্ছে, সে আপনার আদর চাইছে। যুক্তরাজ্যের স্টেভেনেজ মেট্রো স্টেশনের রোজকার চিত্র এটি। সকাল-সন্ধ্যা দুবেলা স্টেশনে গিয়ে যাত্রীদের আদর কাড়ে ‘নালা’ নামের একটি বিড়াল।
নালা কিন্তু পথের বিড়াল নয়। স্টেশনের কাছের এক বাড়ির পোষ্য। বাড়ির বাইরে ঘুরতে ভীষণ ভালোবাসে। তার শরীরে জিপিএস ট্র্যাকিং ডিভাইস বসানো আছে। তার গতিবিধি জানার জন্য এই ব্যবস্থা। একবার তো সিনেমা হলে সে প্রায় পুরো রাতই কাবার করে দিচ্ছিল! তার এই অভিযানের কাহিনি জানা গেছে তার ‘মালিক’ নাতাশা অ্যাম্বলারের কাছে। শেষমেশ তাঁর এক বন্ধু গিয়ে সেবার ফিরিয়ে আনেন নালাকে। তবে নালা যে বাড়ি ফিরতে ইচ্ছুক নয়, এমনটা ভেবে নেবেন না যেন। বাড়িটাকেও সে ভীষণ ভালোবাসে। তবে কিনা অ্যাডভেঞ্চার ছাড়া জীবন কাটাতে সে রাজি না! আর তার রোজকার অ্যাডভেঞ্চারের জায়গা মেট্রো স্টেশন। স্টেশনটাকে বলা যেতে পারে তার ‘সেকেন্ড হোম’। বাড়ির কাছে পার্কেও সে ঘুরতে যায়।
মেট্রো স্টেশনে কখন যাত্রীর ভিড় থাকে, সেই সময়ের হিসাব ঠিকঠাকই রাখে নালা। টিকিট গেটটা তার পছন্দের জায়গা। এক যাত্রীর আদর শেষ হলে আগ্রহ ভরে চেয়ে থাকে পরেরজনের দিকে—এতটাই আদরপ্রিয় চার বছর বয়সী এই বিড়াল। অবশ্য কখনো কখনো যাত্রীদের জন্য রাখা পত্রিকার স্তূপের ওপরও সে আরাম করে বসে থাকে।
নালার সঙ্গে কোনো ‘মালিক’ না থাকায় তার গলায় আটকানো পরিচয়ের ট্যাগ দেখে প্রথম দিকে অনেকেই নাতাশাকে ফোন করতেন। উদ্বিগ্ন হয়ে জানতে চাইতেন, তাঁর বিড়াল হারিয়ে গেছে কি না। সারা দিনে গোটা বিশেক ফোন আসত। পরে নতুন একটি ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা দেখে বোঝা যায়, নালা কোনো হারিয়ে যাওয়া বিড়াল নয়।
নালার জন্য একটা ফেসবুক গ্রুপও খুলেছেন নাতাশা। সেখানে নালার সঙ্গে দেখা হওয়ার সময়টার ছবি পোস্ট করেছেন ওই স্টেশনের শতাধিক যাত্রী। স্টেশনের কর্মীরাও নালার উপস্থিতি উপভোগ করেন। স্টেশন ব্যবস্থাপক শন স্মিথ জানান, মানুষের মুখে হাসি ফোটায় নালা। তাকে কেন্দ্র করে কর্মী ও যাত্রীদের মধ্যে বেশ মজাদার আলাপ চলে। সবাই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। আর সবার কাছেই নালার উপস্থিতি বেশ ইতিবাচক।