জয় বাংলাদেশ: যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটের জন্য নির্ধারিত দিন ৫ নভেম্বর। তবে নির্বাচনের দিন ভিড় কমানো এবং ভোটারদের সুবিধা করে দেয়ার জন্য আগেই ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যবস্থা থাকে দেশটিতে। ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডার ইলেকশন ল্যাবের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, এবার ছয় কোটির বেশি ভোটদাতা এ আগাম ভোটের সুবিধা নিয়েছেন।
ইলেকশন ল্যাবের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক মাইকেল ম্যাকডোনাল্ড জানিয়েছেন, তিনি কলোরাডো, জর্জিয়া, মিশিগান, নর্থ ক্যারোলাইনা, ভার্জিনিয়াসহ ছয়টি ল্যাবের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, ৬ কোটি ২০ লাখ ভোটদাতা ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আগাম ভোট দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথাগতভাবেই কিছু রাজ্য সচরাচর ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে থাকে, আর কিছু থাকে রিপাবলিকানদের পক্ষে। তবে নর্থ ক্যারোলাইনা ও জর্জিয়ার মতো সাতটি অঙ্গরাজ্য এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। এ রাজ্যগুলো যেকোনো দিকেই যেতে পারে। সাধারণত তারা যেদিকে যায় সেই প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এজন্য এ রাজ্যগুলোকে সুইং স্টেট বলা হয়। সুইং স্টেটগুলোর ভোটারদের মধ্যে ৪৫ শতাংশই এবার আগাম ভোট দিয়েছেন।
নির্বাচনকেন্দ্রিক বিভিন্ন সমীক্ষা বলছে, এবার ট্রাম্প ও হ্যারিসের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যত ভোটার ভোট দিয়েছেন, তার ৪০ শতাংশই এবার আগাম ভোট দিয়েছেন। আগাম ভোটিংয়ের হার দেখে বোঝা যাচ্ছে, ভোটদাতারাও এ নির্বাচন নিয়ে বেশ উৎসাহী। জর্জিয়ার সেক্রেটারি অব স্টেট ব্র্যাড রাফেন্সপার্জার বলেছেন, ‘দুই পক্ষের ভোটারদের মধ্যেই ব্যাপক উৎসাহ তৈরি হয়েছে। এ প্রক্রিয়া যাতে সুষ্ঠু ও ন্যায্য হয়, আমরা তাই নিশ্চিত করতে চেয়েছি।’
তবে নির্বাচনের দিন অর্থাৎ ৫ নভেম্বর মঙ্গলবার দিনটি সপ্তাহের মাঝামাঝি এবং কর্মদিবস হওয়ায় অনেকের জন্যই ভোট কেন্দ্রে যাওয়া কঠিন হবে। তাই এবার আগাম ভোটের হার বেশি বলেও মনে করছেন অনেকে। পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত যারা আগাম ভোট দিয়েছেন, তার মধ্যে ৫৫ শতাংশ নারী ও ৪৫ শতাংশ পুরুষ।
এদিকে এ নির্বাচনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে ইউরোপের দেশগুলো থেকেও। একাধিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি ইউরোপের মানুষ মার্কিন নির্বাচনে ভোট দিতে পারতেন, তবে পশ্চিম ইউরোপের ৬৯ শতাংশ এবং পূর্ব ইউরোপের ৪৯ শতাংশ মানুষ হ্যারিসকে সমর্থন করতেন। আর ট্রাম্প পশ্চিম ইউরোপে ১৬ শতাংশ এবং পূর্ব ইউরোপে ৩৬ শতাংশ ভোট পেতেন।
ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ডে হ্যারিসের জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। অন্যদিকে সার্বিয়া ও হাঙ্গেরিতে বেশি সমর্থক ট্রাম্পের। হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ভিক্টর অরবান এরই মধ্যে ট্রাম্পকে শুভ কামনা জানিয়েছেন। ইউরোপে ট্রাম্পের শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে তিনি অন্যতম।
২০২০ সালে সর্বশেষ মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন জো বাইডেন। এবারো নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন তিনি। কিন্তু গত জুলাইয়ে প্রচারণার শেষ দিকে গিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন বাইডেন। তার বদলে ওই সময় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হন কমলা হ্যারিস। তবে শুরু থেকেই প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের দৌড়ে ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এবারের নির্বাচনে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দেখছেন বিশ্লেষকরা। এ লড়াইয়ে ট্রাম্প এগিয়ে গেলে দ্বিতীয় মেয়াদে জয় পেয়ে ক্ষমতায় বসবেন তিনি। আর কমলা হ্যারিস জিতলে প্রথমবারের মতো নারী প্রেসিডেন্ট পাবে যুক্তরাষ্ট্র।