জয় বাংলাদেশ : মন খারাপ ! কিংবা চাইছেন কারো হাসিমুখ দেখবেন ! কাছাকাছি নেই কোন প্রিয়জন ! ভাববেন না, এখন থেকে আপনি চাইলে হেসে দিতে পারে রোবট। মানুষের ত্বকের লিগামেন্ট থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে তৈরি এমনই এক রোবট আবিস্কার করতে যাচ্ছে জাপানিজ বিজ্ঞানীরা। সেল রিপোর্টস ফিজিক্যাল সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাপানের টোকিও ইউনিভার্সিটির গবেষক দল রোবটের বাস্তবসম্মত হাসি ও মুখের অন্য অভিব্যক্তি প্রকাশের জন্য এর মুখে জীবন্ত ত্বক সংযুক্ত করার একটি পদ্ধতি খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন। জাপানিজ বিজ্ঞানীদের মতে, মানুষের মধ্যে থাকা টিস্যু কাঠামোর অনুকরণ করে তারা এই সাফল্য পেয়েছেন। বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত প্রোটোটাইপটি অনেকটা শিশুদের মধ্যে জনপ্রিয় হারিবো ক্যান্ডির আদলে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জীবন্ত কোষ ব্যবহার করে ল্যাবে এ কৃত্রিম ত্বক তৈরি করার ফলে এটি আসল ত্বকের মতোই নরম হওয়ার পাশাপাশি যে কোন ক্ষত নিজেই ঠিক করতে পারে। কৃত্রিম চামড়া সংযুক্ত করার অতীতের প্রচেষ্টাগুলো ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। গবেষক দলটি স্থিতিশীলতা বা নিরাপত্তার জন্য ছোট হুক ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু দেখা গেছে রোবটের নড়াচড়ার সঙ্গে সঙ্গে হুক রোবটের ত্বকের ক্ষতি করেছে। মানুষের ত্বক লিগামেন্টের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ কাঠামোর সঙ্গে যুক্ত হয় যেখানে ক্ষুদ্র হুক হিসেবে নমনীয় কোলাজেন ও ইলাস্টেন দেখা যায় । পুনরায় তৈরি করার জন্য গবেষকরা রোবটটিতে প্রচুর ছোট ছোট গর্ত করেছেন এবং কোলাজেনযুক্ত একটি জেল প্রয়োগ করেছেন। তার ওপরে কৃত্রিম ত্বকের স্তর প্রয়োগ করেছেন। এই জেল গর্তগুলো ভরাট করে এবং রোবটের সঙ্গে ত্বককে সংযুক্ত করে। প্রধান গবেষক প্রফেসর শোজি তাকেউচি বলেন, ‘আমরা মানুষের ত্বকের লিগামেন্টের আদলে একটি শক্ত পদার্থে বিশেষভাবে তৈরি ভি আকৃতির ছিদ্র ব্যবহার করেছি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে জটিল কাঠামোর সঙ্গে ত্বককে বেঁধে রাখার একটি নতুন মাধ্যম খুঁজে পেয়েছি।’ ত্বকের প্রাকৃতিক নমনীয়তা ও দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে থাকার পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছাড়াই রোবটের যান্ত্রিক উপাদানগুলোর সঙ্গে ত্বককে সহজেই অঙ্গভঙ্গি করানো যেতে পারে। গবেষকেরা বলছেন, প্রযুক্তিটি দৈনন্দিন বাস্তবতায় পরিণত হতে আরও অনেক বছর সময় লাগবে। প্রফেসর তাকেউচি বলেন, ‘গবেষণার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হচ্ছে রোবটের ভেতরে অত্যাধুনিক পেশি একীভূত করে মানুষের মতো অভিব্যক্তি তৈরি করা। বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন এই উদ্ভাবন প্লাস্টিক সার্জারি সহ ত্বকের বার্ধক্য, প্রসাধনী ও অস্ত্রোপচার পদ্ধতির গবেষণায়ও কার্যকর হতে পারে।