জয় বাংলাদেশ: ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্নার মৃতদেহ ভারতের মেঘালয়ে খুঁজে পাওয়ার পরে ওই রাজ্যের পুলিশ এখন অনেকটাই নিশ্চিত যে তাকে খুন করা হয়েছিল। তবে তাকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হত্যা করে দেহ ভারতে ফেলে যাওয়া হয়েছিল, নাকি ভারতেই তিনি খুন হন, তা এখনও নিশ্চিত নয়।
ইসহাক আলী খান পান্না ১৯৯৪ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। ২০১২ সালে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক হয়েছিলেন। তিনি পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।
বিএসএফ সূত্রগুলো বলছে পান্নার মৃতদেহ ভারত সীমান্তের প্রায় দেড় কিলোমিটার ভেতরে পাওয়া গেলেও তাকে ভারতে খুন করা হয়নি বলেই তাদের মনে হচ্ছে। তারা এটাও জোর দিয়ে বলছে যে সাম্প্রতিক সময়ে মেঘালয় সীমান্ত অঞ্চলে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক অনুপ্রবেশ করেছেন, এমন তথ্য তাদের কাছে নেই।
মেঘালয়ের ইস্ট জয়ন্তিয়া হিলস জেলার একটি সুপুরি বাগানে পান্নার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। ইস্ট জয়ন্তিয়া হিলস জেলার পুলিশ জানাচ্ছে যে তারা প্রাথমিক তদন্ত গুটিয়ে আনার পথে। দেহের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে জেলাটির সদর শহর খ্লিরিয়াৎ-এর সিভিল হাসপাতালে। সেখানকার মর্গেই তার মরদেহ রাখা রয়েছে এখন।
ময়নাতদন্ত শেষ হলেও সেই রিপোর্ট এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন ইস্ট জয়ন্তিয়া হিলসের পুলিশ সুপার গিরি প্রসাদ এম। শুক্রবার রাতের মধ্যে তারা পুরো ঘটনা নিয়ে একটি বিবৃতি জারি করতে পারেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
তবে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ের স্থানীয় কয়েকটি সংবাদপত্র পুলিশ সূত্র উদ্ধৃত করে লিখেছে যে ময়নাতদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে ইসহাক আলী খান পান্নাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছিল।
সংবাদমাধ্যমের একাংশ জানিয়েছিল যে পান্না সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করে একটি পাহাড়ে চড়তে গিয়ে পড়ে যান। তখনই হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়। সংবাদমাধ্যমের একাংশে এরকমও বলা হচ্ছিল যে সীমান্ত পার হওয়ার সময় বিএসএফের তাড়া খেয়ে তিনি মারা গিয়ে থাকতে পারেন।
বিএসএফের মেঘালয় সীমান্ত অঞ্চলের এক কর্মকর্তা অবশ্য বিবিসিকে স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন যে পান্নার দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় বিএসএফ জড়িত থাকতে পারে বলে যে খবর প্রচার করা হচ্ছে, তা পুরোপুরি মিথ্যা। ওই অঞ্চল দিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে কোনো বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ করেছেন, এমন তথ্যও তাদের কাছে নেই বলেই জানিয়েছেন বিএসএফের ওই কর্মকর্তা।
তাদের প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পান্নাকে হত্যা করে দেহটি ভারতে ফেলে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। তবে এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, একটি মৃতদেহ নিয়ে সীমান্ত রক্ষীদের নজর এড়িয়ে কীভাবে কেউ বা কারা ভারতে প্রবেশ করতে সক্ষম হলো? তার কোনো স্পষ্ট উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি।