জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় দুই আসামির বক্তব্য নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি। শুক্রবার (২২ মার্চ) বিকাল ৩টার দিকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে কারা বিধি মেনে আসামিদের বক্তব্য নেয় কমিটি। কারাগার থেকে বের হয়ে তদন্ত কমিটির সদস্যরা অবন্তিকার কবর জিয়ারত শেষে ঢাকার উদ্দেশ্যে কুমিল্লা ছেড়ে যান।
এর আগে শুক্রবার (২২ মার্চ) সকালে কমিটির পাঁচ সদস্যসহ ৬ জন অবন্তিকার কুমিল্লার বাগিচাগাঁওয়ের বাসায় তার মা ও তাহমিনা শবনম ও ভাই জারিফ জাওয়াদের সঙ্গে কথা বলেন।
তদন্ত কমিটির সঙ্গে কী কথা হয়েছে এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমার কাছে যা জানতে চেয়েছে আমি তদন্ত দলকে সব বলেছি। তারা আমাকে ও আমার ছেলেকে সান্ত্বনা দিয়েছে। আমরা এখন জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ড. জাকির হোসেন বলেন, আমরা তদন্তের কাজ চালাচ্ছি। এ ঘটনার বিষয়ে অবন্তিকার মায়ের কাছ থেকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমরা জানার চেষ্টা করেছি। আমরা তদন্তের জন্য ৫ জন এসেছি। পুলিশের কাছেও আমরা যাব। তার (অবন্তিকা) মেসেঞ্জারে এমন কোনো তথ্য আছে কি-না তা জানার চেষ্টা করব।
তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন সোর্স থেকে বিভিন্ন বক্তব্য পেয়েছি। সেটাকে যেন ভেরিফাই করতে পারি। আমাদের তদন্ত প্রক্রিয়া চলছে। যত দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন দেওয়ার চেষ্টা করব। তবে কবে নাগাদ দিতে পারব এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারব না।
এরপর তদন্ত কমিটির সদস্যরা কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় যান এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন।
কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, জবির তদন্ত কমিটির সদস্যরা কারা বিধি মেনে অবন্তিকার মামলায় কারাগারে থাকা দুই আসামি সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও অবন্তিকার সহপাঠী রায়হান আম্মান সিদ্দিকীর সঙ্গে দেখা করে তাদের বক্তব্য নেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ রাত দশটায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইয়াজ শাদাত অবন্তি সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম সহপাঠী আম্মান সিদ্দীকিকে দায়ী করে তার ফেইবুকে পপোস্ট দিয়ে গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় অবন্তিকার মা তাহমিনা সবনম আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দীকির নাম উল্লেখ ও বেশ কজনকে অজ্ঞাত আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ঐ দুজনকে ঢাকায় গ্রেফতার করে কুমিল্লার আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাইলে আদালত দ্বীন ইসলামকে ১ দিন ও আয়মান সিদ্দিকীকে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে তাদেরকে কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।