জয় বাংলাদেশ: কুমিল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নগরীর কয়েকটি স্থানে ছাত্র, সরকার দলের সমর্থিত নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গুলির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৩ আগস্ট) দিনভর নগরীর কান্দিরপাড়, সার্কিট হাউজ মোড় ও পুলিশ লাইন্স সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে এই ঘটনা ঘটে। এতে ৭জন গুলিবিদ্ধসহ (ছররা গুলি) বিভিন্ন পক্ষের অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ লাইন্স এলাকায় একজন সাংবাদিকের ক্যামেরা ভাঙচুরের চেষ্টাসহ কয়েকজনের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়।
দুপুরে নগরীর পুলিশ লাইন্স ও বাগিচাগাঁও এলাকায় শিক্ষার্থীদের পেছন থেকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয়। মুহুর্মুহু গুলির শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নগরীর বাগিচাগাঁও ও পুলিশ লাইন্স এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করতে দেখা যায়। এসময় হকিস্টিক, লাঠি দিয়ে হামলা করা হয়। গুলিবর্ষণ ও হামলার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আন্দোলনকারীরা হামলাকারীদের সরকার দলের নেতাকর্মী বলে দাবি করেন।
এদিকে, কুমিল্লা সরকারি কলেজের সৌরভ নামের এক শিক্ষার্থীসহ দুইজন নিহতের গুজব ছিল নগরীতে দিনভর। কয়েকটি ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে জেলা পুলিশ সুপার সাইদুল ইসলাম, জেলা সিভিল সার্জন নাছিমা আক্তারসহ সরকারের কোনও সূত্র থেকে এমন মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়নি। তবে তারা দাবি করেন, পরিস্থিতিকে অশান্ত করতে একটি মহল এমন গুজব ছড়াচ্ছে। কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি ফিরোজ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, পুলিশ লাইন্স সড়ক এলাকায় সংঘর্ষের কবলে পড়ে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী দৌড়ে পুলিশ লাইন্সের ভেতরে আশ্রয় নিলে পুলিশ সুপারের নির্দেশে তাদের নিরাপত্তা দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়।
এদিকে জেলার চান্দিনা উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বাগুর বাস স্টেশন এলাকায় দুপুর পৌনে একটার দিকে চান্দিনা উপজেলা সহকারী কমিশনারের একটি সরকারি গাড়ি আন্দোলনকারীরা প্রথমে ভাঙচুর করে এবং পরে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এসময় গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত আত্মরক্ষা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সৌম্য চৌধুরী ও তার গাড়ির চালক। এ ঘটনায় মহাসড়কের উভয় দিকে অন্তত ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাবের সোয়াইব জানান, আন্দোলনে কিছু শিক্ষার্থী থাকলেও তাদের বুঝিয়ে বলায় তারা বিক্ষোভ শেষে মহাসড়ক থেকে সরে যায়। দুষ্কৃতকারীরা এসি-ল্যান্ডের গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে। এছাড়া জেলার দাউদকান্দি, মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ, নাঙ্গলকোট, বুড়িচংসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করে আন্দোলনকারীরা।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কারও ওপর হামলা করিনি। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিএনপি ও শিবিরের লোকেরা এক হয়ে নাশকতা সৃষ্টি করছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি।