Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeস্বদেশ সংবাদগণতন্ত্র বিরোধী অপশক্তির মুখে অস্ত্র তুলে দিতেই টিআইবি'র এমন প্রতিবেদন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

গণতন্ত্র বিরোধী অপশক্তির মুখে অস্ত্র তুলে দিতেই টিআইবি’র এমন প্রতিবেদন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বক্তব্যের সমালোচনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিজ্ঞজনেরা বলছেন, বিএনপিসহ যারা নির্বাচন বর্জন করেছে, প্রতিহত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এখনও প্রয়াস চালাচ্ছে তাদের মুখে অস্ত্র তুলে দেওয়ার জন্যই টিআইবি এমন প্রতিবেদন দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী সাহেব প্রতিদিন সংবাদ সম্মেলন করে যে কথাগুলো বলেন সেগুলোকে একটু পরিশীলিতভাবে টিআইবি পরিবেশন করেছে, বিএনপি আর টিআইবির ভাষা মিলে গেছে সে কারণে টিআইবি’র এই রিপোর্ট আসলে কারও পক্ষের হয়ে দেওয়া কি না সেই প্রশ্ন রেখেছে অনেকে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, টিআইবি’র একটি রিপোর্ট গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। টিআইবি সবসময় গবেষণালব্ধ রিপোর্ট বলে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে টিআইবি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোনো গবেষণা না করে কিছু ‘শ্যালো’ বিষয়, কিছু পত্রিকার রিপোর্ট এবং তড়িঘড়ি করে কিছু তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে প্রেস ব্রিফিং করে। গতকালেরটাও আমার কাছে সে রকম মনে হয়েছে।

টিআইবি’র রিপোর্টকে একপেশে ও পক্ষপাতদুষ্ট উল্লেখ করে নির্বাচন নয়ে এতে তোলা অভিযোগ খণ্ডন করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, প্রতিটি আসনেই অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন এবার যে বলিষ্ঠভাবে তাদের সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে, আইন-কানুন প্রয়োগ করেছে, তা অতীতে এতো কঠোরভাবে হয়েছে কি না তা আমার অন্তত মনে পড়ে না।

উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার পাঁচজন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। এমন কি নির্বাচনের দিন বিকাল তিনটায় চট্টগ্রাম ১৬ আসনে আমাদের দলের নৌকা মার্কার প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে। আমাদের দলের জ্যেষ্ঠ নেতা আমির হোসেন আমুকে নির্বাচন কমিশনে তলব করা হয়েছে, তিনি সেখানে গেছেন।’

তিনি বলেন, ‘শুধু তাই নয়, নির্বাচনের পরের দিন বর্তমান ধর্মমন্ত্রীকে কমিশন সমন দিয়েছিল, তিনি সেখানে গিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন, এ কারণে যে তিনি সিলটি গোপন কক্ষে না দিয়ে বাইরে দিয়েছিলেন। বিদ্যুতের খুঁটিতে বা দেওয়ালে পোস্টার লাগানোর কারণেও কমিশন প্রার্থীদের নোটিশ করেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও নোটিশ দিয়েছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অর্থাৎ নির্বাচন কমিশন যে কি রকম কঠোরভাবে, সুন্দরভাবে নির্বাচন পরিচালনা করেছে, সেটির বহি:প্রকাশ হচ্ছে এইসব নজীর। কিন্তু এগুলোর কোনো প্রশংসা টিআইবি’র রিপোর্টে নাই। অথচ উনারা না কি গবেষণা করেছেন। আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আসা পর্যবেক্ষক, ওআইসি, সার্ক, কমনওয়েলথভুক্ত দেশ থেকে যারা এসেছিল সবাই যখন নির্বাচনের প্রশংসা করেছে এবং নির্বাচনের পর সবাই প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। বিভিন্ন দেশ নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে, সেটিকে ম্লান করার জন্যই টিআইবি’র এই প্রতিবেদন।’

টিআইবির সমালোচনা করলেও এ ধরনের সিভিল সোসাইটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো যারা সরকারের ভুলত্রুটি উপস্থাপন করে, সরকারের সমালোচনা করে আমরা সেগুলোকে সমাদৃত করার সংস্কৃতিটাই লালন করি। কিন্তু যখন রিপোর্ট কারও পক্ষ হয়ে যায় বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয় তখন সেটি রাষ্ট্র, সমাজ ও সরকার কারো উপকারে আসে না; সেটি বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর মুখপাত্র হয়ে দাঁড়ায়।

টিআইবি যেন বিশেষ কোনো গোষ্ঠী বা নির্বাচনবিরোধী কিংবা গণতন্ত্রবিরোধী কোনো শক্তির মুখপাত্র না হয় তেমনটা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।

টিআইবিকে সরকারের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নোটিশ করা হবে কিনা-জানতে চাইলে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আশা করব, টিআইবি নিজেরা নিজেদের সংগঠনের যে মর্যাদা রাখবে। তাদের সম্পর্কে যে ধারণা মানুষ আগে পোষণ করত সেখান থেকে সরে এসে তারা নির্বাচনবিরোধী অপশক্তির কিংবা গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির সহায়ক শক্তি হিসেবে যেন কাজ না করে সেটি আমাদের কামনা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments