জয় বাংলাদেশ : প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত গণ নির্বাসন পরিকল্পনার কারণে আতংকে পড়েছেন নিউইয়র্ক সিটির অভিবাসী সম্প্রদায়গুলো। বিশেষ করে ব্রুকলিন ও কুইন্সের মতো এলাকায় বসবাস করছেন এমন আন-ডকুমেনটেড অভিবাসীরা ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম উদ্বেগে আছেন।
তথ্য বলছে, নিউইয়র্ক সিটিতে প্রায় ৪১ লাখ ২০ হাজার অনথিভুক্ত অভিবাসী বসবাস করছেন। এখানে অধিকাংশ অভিবাসী সুরক্ষিত থাকেন। সচরাচর ভয়াবহ কোন অপরাধ না করলে কাউকে নির্বাসিত করা হয় না। তবে সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসী নীতি শঙ্কিত করছে লাখ লাখ অনথিভুক্ত অভিবাসীদের।
এদের একজন আবদুল্লাহ সায়েক । ১২ বছর আগে মেক্সিকো বর্ডার দিয়ে প্রবেশ করেছিলেন বাংলাদেশ থেকে। এরপর সোজা নিউইয়র্কে । বর্তমানে বসবাস করছেন কুইন্সের বেলরোজে । তিনি বলেন, এখানে আসার পর পরিবার হয়েছে আমার। আমার মতো সেও কাগজপত্র বিহীন । ট্রাম্পের অবৈধ অভিবাসীদের বের করে দেয়ার ঘোষনায় এখন আতংকে আমরা। তিনি বলছেন, ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অভিবাসন এজেন্টদের সক্রিয় করবেন এবং বিপুল সংখ্যক অনথিভুক্ত অভিবাসীকে বিতাড়িত করবেন।
এই আতঙ্ক ব্রুকলিনের বিভিন্ন এলাকা , কুইন্সের জ্যাকসন হাইটসসহ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। জনসন নামে কুইন্সের অপর এক বাসিন্দা বলেন, আমি ভীত! আমার সন্তান ও নাতি-নাতনি রয়েছে। আমি কঠোর পরিশ্রম করি। আমাদের নির্বাসন করা অন্যায় হবে।
নিউইয়র্ক সিটির ব্যবসায়ী ও সংগঠক ক্যাথরিন ওয়াইল্ড বলেন, অভিবাসীরা কর দিয়ে আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। প্রায়শই এখানে ১০-২০ বছর ধরে আইনি মর্যাদা ছাড়াই রয়েছেন। কোনো নীতি এই জনসংখ্যাকে বিঘ্নিত করলে তা আমাদের অর্থনীতি ও শহরের ওপর বড় প্রভাব ফেলবে।
দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারে অভিবাসনকে তার এজেন্ডার শীর্ষে রেখেছিলেন তিনি। দেশের দক্ষিণ সীমান্তে, তার ভাষায় ‘নজিরবিহীন শৃঙ্খলা’ আরোপ করার অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি।
নির্বাচনী প্রচারের সময় ট্রাম্প অঙ্গীকার করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম দিনেই তিনি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অবৈধ অভিবাসী বহিষ্কার অভিযান শুরু করবেন। প্রচারের পুরো সময়জুড়ে ট্রাম্প অভিবাসনকে একটি সংকট হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি অবৈধ অভিবাসন এবং নতুন অভিবাসী আটকানোর লক্ষ্যে এক রাশ বিতর্কিত নীতি দ্রুত বাস্তবায়ন করার অঙ্গীকার করেছেন।
এদিকে নির্বাচিত হতে গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প একটি গণ নির্বাসন পরিকল্পনা প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন,আমার প্রথম কার্যদিবস থেকে আক্রমনাত্মক অভিবাসন নীতি প্রয়োগে অভিযান শুরু করা হবে। যার আওতায় অপরাধমূলক রেকর্ডসহ অবৈধ বাসিন্দাদের নির্বাসন করা হবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন সংক্রান্ত আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের এই নির্দেশনা মার্কিন সংবিধানবিরোধী এবং যদি ক্ষমতা গ্রহণের পর সত্যিই এই নির্দেশনা কার্যকর হয়, তাহলে সংবিধান লঙ্ঘনের মতো গুরুতর ঘটনা ঘটবে।