জেবি টিভি রিপোর্ট : ব্যতিক্রমী পরিবেশ বান্ধব স্থাপত্যের জন্য সবসময় বিশ্বব্যাপী বেশ পরিচিত মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুবাই । সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং, গভীরতম পুল বা সর্বোচ্চ হোটেলের মতো অনন্য সব স্থাপনাকে ছাপিয়ে দুবাইয়ের নগর নকশা সংস্থা ইউআরবি এবার উন্মোচন করেছে বিশ্বের সবুজতম হাইওয়ের নকশা। ইউআরবি একটি ৬৪ কিলোমিটার দীর্ঘ হাইওয়ের ধারণামূলক নকশা প্রকাশ করেছে যা শহরের অন্যতম প্রধান ট্র্যাফিক স্থান শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ রোডকে নান্দনিক বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি বাস্তুতন্ত্রের কার্যকরী উপাদান হিসেবে ‘গ্রিন স্পাই্নে’ রূপান্তরিত করবে। এছাড়া নকশায় স্ব-নিয়ন্ত্রিত সৌর চালিত ট্রাম ও স্মার্ট ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা যোগ করা হয়েছে।
নগর পরিকল্পনাবিদ ও ইউআরবির প্রতিষ্ঠাতা বাহারাশ বাঘেরিয়ানের মতে, ‘প্রথম ধরন হিসেবে এসব প্রকল্প শহরের নকশাকে আরও মানব-কেন্দ্রিক করে তুলবে।’ দ্রুত প্রসারিত হওয়া দেশের মধ্যে দুবাই অন্যতম। ২০৪০ সালের মধ্যে এর জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে আট মিলিয়ন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাঘেরিয়ান বলেছেন, এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে এবং বর্তমান ও ভবিষ্যতের উভয় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবন প্রয়োজন। তিনি প্রকাশিত নকশা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, স্ব-নিয়ন্ত্রিত সৌর চালিত ট্রামটি প্রস্তাবিত হাইওয়ের পরিবহন ব্যবস্থার একটি অন্যতম অংশ।
ট্রাম লাইনের ওপরে সবুজ অঞ্চল, পার্ক ও ওভারপাসের একটি নেটওয়ার্ক শহরের সংযোগ এবং সাধারণের হাঁটার জন্য পথচারী বান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলবে। হাইওয়ে ট্র্যাফিক পরিচালনা করতে ও বিদ্যুতের ব্যবহার সহজ করতে করতে ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি) সেন্সরের মতো স্মার্ট প্রযুক্তিও যোগ করা হবে। বাঘেরিয়ানের নকশায় ৩০০ মেগাওয়াট সৌর প্যানেল ও একটি স্টোরেজ সিস্টেম সংযুক্ত করা হয়েছে যা ট্রাম লাইনকে বিদ্যুৎ সরবারহের পাশাপাশি আনুমানিক ১৩০,০০০ বাড়ির জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। এছাড়া পার্ক ও কমিউনিটি বাগান সহ সবুজ স্থানগুলো এক মিলিয়ন গাছের জন্য জায়গা সরবরাহ করবে শহরটিকে শীতল করতে এবং বায়ুর গুণমান উন্নত করতে সহায়তা করবে।
যদিও মরুভূমির শহরে বিশ্বের সবুজতম হাইওয়ে তৈরি করা খুব সহজ হবে না। বাঘেরিয়ান বলেছেন, দুবাই দ্রুত বৃদ্ধি, বৈচিত্র্যময় জনসংখ্যা, শহুরে বিস্তৃতি ও চরম জলবায়ু পরিস্থিতির মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অনন্য নজির স্থাপন করেছে। তাই ধারণাগত নকশাগুলো বাস্তবে পরিণত করা কঠিন মনে হলেও তা ততটা কঠিন নয়। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে সরকারি খাতের সংস্থাগুলোকে এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্পটিকে প্রাণবন্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা, নিয়ন্ত্রক কাঠামো ও অবকাঠামোগত সহায়তা সরবরাহ করা প্রয়োজন। বাঘেরিয়ান আশাবাদী যে এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটবে। কারণ প্রকল্পটি সরকারের ২০৪০ সালের নগর মাস্টার প্ল্যানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।