বর্তমানে দেশের প্রায় ৩৭ শতাংশ মানুষ ঋণ করে সংসার চালাচ্ছে। আর জাতীয় পর্যায়ে পরিবার প্রতি এ ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৯৮০ টাকা। আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভের’ (এইচআইইএস- ২০২২) চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। এ পরিসংখ্যান প্রস্তুতে গত ১২ মাসে পরিবারপ্রতি গড় ঋণের হিসাব স্থান পেয়েছে।
বিবিএসের জরিপ বলছে, গ্রামাঞ্চলের মানুষের চেয়ে শহরাঞ্চলের মানুষের ঋণ অনেক বেশি। শহর এলাকায় প্রতি পরিবার গড়ে ঋণ নিয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৫৬ টাকা। ২০১৬ সালে তা ছিল ৫৯ হাজার ৭২৮ টাকা। অর্থাৎ ছয় বছরে শহরের পরিবারগুলোর ঋণ বেড়েছে ১৩০ দশমিক ১০ শতাংশ।
অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলে প্রতি পরিবার ঋণ নিয়েছে ৪৪ হাজার ৪১১ টাকা। ২০১৬ সালে তা ছিল ৩১ হাজার ৩৩২ টাকা। অর্থাৎ ছয় বছরে গ্রামের পরিবারগুলোর ঋণ বেড়েছে ৪১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। সেই হিসাবে শহরের পরিবারগুলোর ঋণ গ্রামের পরিবারগুলোর চেয়ে তিনগুণ বেশি।
জরিপ অনুসারে, ঢাকা বিভাগের পরিবারগুলোর ঋণের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। ঢাকা বিভাগের পরিবারগুলোর গড় ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৫০ টাকা। আর সবচেয়ে কম ঋণ ময়মনসিংহ বিভাগের পরিবারগুলোর। এ বিভাগের প্রত্যেক প্রতি পরিবারের ঋণ ৩৪ হাজার ৩৫৭ টাকা।
আর শহরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ঋণ ঢাকা শহরের পরিবারগুলোর। ঢাকা শহরের প্রত্যেক পরিবারের গড় ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ১০ হাজার ৬৭৭ টাকা। আর রাজশাহী শহরের পরিবারগুলোর ঋণ সবচেয়ে কম। রাজশাহী শহরের পরিবারগুলোর গড় ঋণের পরিমাণ ৪৮ হাজার ৮১৬ টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের একটি পরিবার মাসে গড় আয় করে সাড়ে ৩২ হাজার টাকা। আয়ের বিপরীতে একটি পরিবারের ব্যয় সাড়ে ৩১ হাজার টাকা। অর্থাৎ একটি পরিবার মাসে এক হাজার টাকার মতো সঞ্চয় করে।
বিবিএস জানায়, দেশের প্রতিটি খানার গড় আয় উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এইচআইইএসের ২০২২ জরিপের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, খানার মাসিক গড় আয় ৩২ হাজার ৪২২ টাকা, যা ২০১০ ও ২০১৬ সালের জরিপে ছিল যথাক্রমে ১১ হাজার ৪৭৯ এবং ১৫ হাজার ৯৮৮ টাকা। আর বর্তমানে একটি খানার মাসিক ব্যয় ৩১ হাজার ৫০০ টাকা, যা ২০১০ ও ২০১৬ সালে ছিল যথাক্রমে ১১ হাজার ২০০ এবং ১৫ হাজার ৭১৫ টাকা।
বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্র্যাকের চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব শাহনাজ আরেফিন ও সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য কাউছার আহমেদ। মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ।