Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeখেলাপাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

জয় বাংলাদেশ : দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের পঞ্চম দিনে সফরকারী বাংলাদেশ ৬ উইকেটে হারায় পাকিস্তানকে।
প্রথম টেস্ট ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে জিতেছিলো টাইগাররা। ফলে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। এই প্রথমবারের মত পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়লো নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে নবম টেস্ট সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। এর মধ্যে তৃতীয়বারের মত বিদেশের মাটিতে সিরিজ জয় টাইগারদের। এর আগে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ এবং ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের মাটিতে এক ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতেছিলো টাইগাররা। দুই বা ততোধিক ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের পর পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ।

১৮৫ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে গতকাল টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে বিনা উইকেটে ৪২ রান করেছিলো বাংলাদেশ। দুই ওপেনার জাকির হাসান ৩১ ও সাদমান ইসলাম ৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আজ পঞ্চম দিনের ষষ্ঠ ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের পেসার মির হামজার বলে বোল্ড হন জাকির। ৩৯ বল খেলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন তিনি। দলীয় ৫৮ রানে জাকির ফেরার পর হামজার বলে ব্যক্তিগত ১৭ রানে স্লিপে সালমান আঘাকে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান সাদমান। জীবন পেয়ে বেশি দূর যেতে পারেননি তিনি। আরেক পেসার খুররম শাহজাদের বলে মিড অনে অধিনায়ক শান মাসুদকে ক্যাচ দেন ২টি চারে ২৪ রান করা সাদমান।

৭০ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের বিদায়ের পর জুটি গড়ার চেষ্টায় সফল হন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক। এরপর ৫২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে প্রথম সেশনের খেলা শেষ করেন তারা। ২ উইকেটে ১২২ রান নিয়ে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। এসময় জয় থেকে ৬৩ রান দূরে ছিলো টাইগাররা।

দ্বিতীয় সেশন শুরুর পর সাজঘরে ফিরেন শান্ত। স্পিনার সালমানের লেগ স্টাম্পের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দেন ৫টি চারে ৩৮ রান করা টাইগার অধিনায়ক। মুমিনুল-শান্ত ৫৭ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ১২৭ রানে শান্ত ফেরার পর মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন মুমিনুল। দলের রান দেড়শ পার করে বাংলাদেশকে জয়ের পথে রাখেন তারা। এরপরই বিচ্ছিন্ন হন মোমিনুল ও মুশফিক। স্পিনার আবরার আহমেদের বলে মিড অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাইম আইয়ুবকে ক্যাচ দেন মুমিনুল। ৪টি চারে ৩৪ রান করেন তিনি।

মুমিনুল ফেরার সময় জয়ের জন্য ৩২ রান দরকার ছিলো বাংলাদেশের। মুশফিককে নিয়ে দেখেশুনে খেলে অবিচ্ছিন্ন ৩২ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান সাকিব। আবরারের করা ইনিংসের ৫৬তম ওভারের শেষ বলে এক্সট্রা কাভার দিয়ে চার মেরে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সাকিব। এক বাউন্ডারিতে মুশফিক ২২ এবং ১টি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারিতে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন সাকিব। হামজা-শাহজাদ-আবরার ও সালমান ১টি করে উইকেট নেন।

প্রথম ইনিংসে ১৩৮ রানের নান্দনিক ইনিংসের সুবাদে ম্যাচ সেরা হন বাংলাদেশের লিটন দাস। সিরিজ সেরা হন মেহেদি হাসান মিরাজ। এই জয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে দুই ধাপ এগিয়ে চতুর্থ স্থানে উঠলো বাংলাদেশ। ৬ ম্যাচে ৩টি করে জয়-হারে ৪৫.৮৩ শতাংশ পয়েন্ট আছে টাইগারদের। এই টেস্ট হারে পয়েন্ট হারালেও অষ্টম স্থানেই আছে পাকিস্তান। ৭ ম্যাচে ২ জয় ও ৫ হারে ১৯.০৫ শতাংশ পয়েন্ট আছে পাকিস্তানের। টেবিলের শীর্ষে আছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া।

এদিকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এবং তার দলকে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।

রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ছয় উইকেটে বাংলাদেশের জয়ের পর প্রধান উপদেষ্টা শান্তকে ফোন করে বলেন, ‘সরকার এবং আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন। পুরো জাতি আপনাদের নিয়ে গর্বিত।’

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় প্রধান উপদেষ্টার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, দেশে ফেরার পর বাংলাদেশ দলকে সংবর্ধনা দেয়া হবে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

পাকিস্তান প্রথম ইনিংস : ২৭৪/১০, ৮৫.১ ওভার (আইয়ুব ৫৮, মাসুদ ৫৭, সালমান ৫৪, মিরাজ ৫/৬১, তাসকিন ৩/৫৭)।

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ২৬২/১০, ৭৮.৪ ওভার (লিটন ১৩৮, মিরাজ ৭৮, শাহজাদ ৬/৯০)।

পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংস : ১৭২/১০, ৪৬.৪ ওভার (সালমান ৪৭*, রিজওয়ান ৪৩, হাসান ৫/৪৩, রানা ৪/৪৪)।

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ১৮৫/৪, ৫৬ ওভার (জাকির ৪০, শান্ত ৩৮, মোমিনুল ৩৪, মুশফিক ২২*, সাকিব ২১ *, সালমান ১/১৪)।

ফল : বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী

সিরিজ : দুই ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জয়ী বাংলাদেশ

ম্যাচ সেরা : লিটন দাস (বাংলাদেশ)

সিরিজ সেরা : মেহেদি হাসান মিরাজ (বাংলাদেশ)

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments