সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। পাশাপাশি রেলপথও অবরোধ করায় ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার (১০ জুলাই) সকাল থেকে দেশজুড়ে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর অংশ হিসেবে সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, বাংলামোটর, নীলক্ষেত, পল্টন, চানখারপুল, ঢাকা মেডিকেল কলেজসংলগ্ন মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ওঠার রাস্তা, মৎস্য ভবনসহ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করে রেখেছে তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজে যাবেন বলার পরও যানবাহন আটকে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। এর ফলে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। যাত্রীদের গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। অনেকে আবার বিকল্প পথ খুঁজছেন। মাঝে মধ্যেই বাইকার ও অন্য যানবাহনের চালকদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা হচ্ছে তাদের। তবে অ্যাম্বুলেন্সকে সড়ক ছেড়ে দিতে দেখা গেছে।
রাজধানীর পান্থপথ মোড়ে যানজটে আটকে থাকা হিমি আক্তার নামে এক নারী বলেন, জরুরি কাজে বের হয়েছি। কিন্তু জ্যাম ধানমন্ডি পর্যন্ত চলে গিয়েছে। সাধারণ মানুষের খুব ভোগান্তি হচ্ছে। বেলা ১১টা থেকে রাস্তায় বসে আছি, এখন ২টা বাজে।
দিশারী বাসের এক চালক বলেন, গাড়ি নিয়ে সায়েন্সল্যাব এসে দেখি রাস্তা বন্ধ। প্রায় দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। কখন ছাড়বে জানি না।
এদিকে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ আজ এ স্থিতাবস্থা জারি করেন।
তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ আদেশ প্রত্যাখ্যান করে দেশজুড়ে চলমান ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। কোটা সংস্কারের বিষয়ে কোর্ট নয়, নির্বাহী বিভাগের কাছে সিদ্ধান্ত চান তারা।