জয় বাংলাদেশ : বাংলাদেশে চলমান ভয়াবহ বন্যায় ১৬ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সেই সঙ্গে দেশের ১১ জেলায় বন্যায় ৪৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫ (সাড়ে ৪ মিলিয়ন প্রায়) মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.কামরুল হাসান জানান, ফেনী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারে ব্যাপক বন্যাসহ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
বন্যায় ৭৭টি উপজেলার ৫৮৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৮ লাখ ৮৭ হাজারের বেশি পরিবার ক্ষয়ক্ষতির কবলে পড়েছে।দুই নারীসহ ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন সচিব। হতাহতদের মধ্যে কুমিল্লার চারজন, ফেনীর একজন, চট্টগ্রামে দুজন, নোয়াখালীর একজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন ও কক্সবাজারে তিনজন রয়েছেন।
সংকট মোকাবিলায় সরকার ৩ হাজার ১৬০টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে। এসব কেন্দ্রে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭৩৯ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া বন্যাকবলিত এলাকায় প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা দিতে ৬৩৭টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
দুর্গতদের সহায়তার জন্য মন্ত্রণালয় নগদ ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা, ২০ হাজার ১৫০ টন চাল এবং ১৫ হাজার খাদ্যের প্যাকেট বিতরণ করেছে। চলমান দুর্যোগ মোকাবিলায় সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ রয়েছে বলেও আশ্বস্ত করেন সচিব।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ৯টায় খোয়াই নদীর পানি সিলেটের বাল্লা পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আর হবিগঞ্জ পয়েন্টে এই নদীর পানি যাচ্ছিল ১৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।
কুমিল্লায় গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, যেখানে দেবীদ্বার পয়েন্টে পানি যাচ্ছিল বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।
চট্টগ্রামের রামগড় স্টেশনে ফেনী নদীর পানি প্রবাহিত হচ্ছিল বিপৎসীমার ২১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। চট্টগ্রামে হালদা নদীর পানি নারায়ণহাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে যাচ্ছিল, আর পাঁচপুকুরিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।
সকালে মৌলভীবাজার পয়েন্টে মনু নদীর পানি বিপৎসীমার ১১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আর ফেনীর পরশুরাম স্টেশনের সঙ্গে ‘যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন’ হওয়ায় সেখানকার মুহুরী নদীর বিষয়ে তথ্য দিতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড।