Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeস্বদেশ সংবাদবাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত সংস্কারে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির ১৭৫ কোটি ডলার ঋণ

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত সংস্কারে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির ১৭৫ কোটি ডলার ঋণ

জয় বাংলাদেশ: দেশের ব্যাংক খাত সংস্কারে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ঋণ দিচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আধুনিকায়ন এবং সক্ষমতা বাড়ানোর কাজেও এই ঋণ ব্যয় করা হবে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকেও সহায়তার আশ্বাস মিলেছে।

প্রাথমিকভাবে বিশ্বব্যাংক থেকে ৪০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণের বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঋণের পরিমাণ বাড়িয়ে ৪৫ কোটি ডলার করা নিয়ে এখন আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি এডিবি দেশের ব্যাংক খাত সংস্কারে ১৩০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। এই ঋণ দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে পুনর্মূলধন হিসেবে দেওয়া যায় কি না, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।

ব্যাংক খাত সংস্কারে কমিশন গঠনের পরিবর্তে এখন সরকার দ্রুত তিনটি টাস্কফোর্স করার পরিকল্পনা করছে।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ব্যাংক খাত সংস্কারে জোর দেয় নতুন অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুরকে। এরপর ১০টি ব্যাংক ও ১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। এর মধ্যে ৯টির মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ ছিল বহুল আলোচিত এস আলম গ্রুপের হাতে। এসব ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ নামে-বেনামে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা বের করে নিয়েছে, যা আদায় করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে পর্ষদ পরিবর্তিত হওয়া ব্যাংকগুলো। তারল্য–সংকটে পড়ে এসব ব্যাংকের স্বাভাবিক লেনদেন কার্যক্রম ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এই ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের বেতনও অনিয়মিত হয়ে পড়েছে।

এ জন্য ব্যাংক খাত সংস্কারে কমিশন গঠনের পরিবর্তে দ্রুত তিনটি টাস্কফোর্স করার পরিকল্পনা করছে সরকার। কারণ, কমিশন গঠন করে সুপারিশ প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। এর পরিবর্তে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে শিগগিরই সংস্কার শুরু করতে চায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। টাস্কফোর্সের মধ্যে একটি হবে, খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনা–সংক্রান্ত, আরেকটি বাংলাদেশ ব্যাংক শক্তিশালীকরণ বিষয়ে। অন্য টাস্কফোর্স হবে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনা নিয়ে।

জানা গেছে, ব্যাংক খাত সংস্কারে টাস্কফোর্সগুলো যাতে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারে, সে জন্য দেশি-বিদেশি সর্বোচ্চ কারিগরি জ্ঞান ও সহায়তা নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। এ জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা–ও কম সুদের বিদেশি উৎস থেকে সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। এতে সাড়া দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি ৪০ কোটি ডলার দিতে পারে, যার সুদের হার হবে ৬-৬.৫০ শতাংশের মধ্যে। একই রকম সুদে এডিবি থেকে ১৩০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়া নিয়ে এখন আলোচনা হচ্ছে। এডিবি প্রথম বছরে ৫০ কোটি ডলার, দ্বিতীয় বছরে ৫০ কোটি ডলার ও তৃতীয় বছরে ৩০ কোটি ডলার ঋণসহায়তা দিতে পারে।

জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের ঋণে নতুন প্রকল্প নেওয়া হবে। আর এডিবির ঋণের অর্থও এই প্রকল্পে ব্যবহার করা হতে পারে অথবা এডিবির জন্য পৃথক প্রকল্প গঠন করা হতে পারে। এডিবি ঋণ দেবে বাজেট–সহায়তা হিসেবে। আইএমএফ থেকেও কারিগরি জ্ঞান নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

 

ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি সেলিম আর এফ হোসেন সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশের ব্যাংক খাতে আসল পচন শুরু হয় ২০১৭ সালে। তখন একটি শিল্পগোষ্ঠীকে দেশের একটি বড় বেসরকারি ব্যাংক সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের সুযোগ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে পরিস্থিতি অতটা খারাপ ছিল না। মূলত বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই আপসের পথে গেছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments