বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডরের সম্মাননা
মানব সেবা ও বিশ্বশান্তির পক্ষে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমাণ্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেছেন। একই সঙ্গে তাকে ইনস্টিটিউট অফ পাবলিক পলিসি এণ্ড ডিপলোমেসি রিসার্চ এর পক্ষ থেকে গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডরের সম্মাননা প্রদান করা হয়।
হিউমানিটারিয়ান ফোকাস ফাউন্ডেশন, ইউনাইটেড গ্রাজুয়েট কলেজ সেমিনারি ইন্টারন্যাশনাল ও থাউজেন্ড শেডস অব উইম্যান ইন্টারন্যাশনালের এক বর্ণাঢ্য গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে ওই ডিগ্রি প্রদান করা হয়। তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তির পক্ষে অবদান রাখার জন্য আরো সাতজনকে সম্মানসূচক ডক্টরেট প্রদান করা হয়।
নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে থেউজেন্ডস শেডব অব উইমেন ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারপার্সন ডিওর ফলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মানবিক বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত আফ্রিকান আমেরিকান লেখক, মানবতাবাদী ‘কুইন মাদার’খ্যাত ডিলোইস ব্লেকলি। বক্তব্য রাখেন ড. ব্যাস, ড. ক্লাইড রিভার্স প্রমুখ।
নিউইয়র্কে হোম কেয়ার সেবার পথিকৃৎ, বাংলা সিডিপ্যাপ সার্ভিসেস ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট এণ্ড সিইও এবং পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস -পিপল আপ এর প্রেসিডেন্ট আবু জাফর মাহমুদের সঙ্গে আরো যারা সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন জতিসংঘের দূত ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ফাউণ্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল মালিক নাদিম আবিদ, নিউইয়র্কের ব্রংকস বোরো প্রেসিডেন্ট ভেনেসা এল গিবসন, মানবতার দূত মুসু কে ড্রামেহ, সেইডি সারা, ক্লারিজ মেফোটসো ফল, মারিয়া থমাস ও ইউমা বা।
সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি গ্রহণের পর অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আমি জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্ব করেছি, এই সম্মানসূচক স্বীকৃতি ও ডিগ্রির মধ্য দিয়ে আজ আমার কর্মপরিধির আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের দায়বদ্ধতা উপলব্ধি করছি। আজ মনে হচ্ছে আমি গ্লোবাল ফাইটার।
তিনি ডিওর ফলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, জাতিসংঘের নিকটবর্তী এই জায়গাটি আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্ষেত্র। একাধারে বিশ্বেরও গুরুত্বপূর্ণ একটি কেন্দ্র। এখানে বিশ্বনেতৃত্বের কাজে আমাকে যুক্ত করার প্রয়াস নিয়ে ডিওর ফল দিদি আমাকে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করেছেন। সারা পৃথিবীর যুদ্ধ বিধ্বস্ত ও দুর্যোগ কবলিত জাতিগুলির জন্য মানবতার পক্ষে লড়াই করতে আমাকে সুযোগ করে দিয়েছেন।
আবু জাফর মাহমুদ বলেন, জন্ম থেকেই আমি যোদ্ধা। আমি জন্মেছি সন্দ্বীপে। সেটি বাংলাদেশের চারদিকে সমুদ্রবেষ্টিত একটি দ্বীপ। সমুদ্রের ঢেউ দেখে দেখে, জলোচ্ছ্বাস বন্যা দেখে দেখে, ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করে করে আমরা বেড়ে উঠেছি। মেঘনার ভাঙন, দুর্গত মানুষের হাহাকারসহ প্রকৃতির সকল রুদ্র শাসনে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে থেকেই বেড়ে উঠেছি আমি। একইভাবে যৌবনে ১৮ বছর বয়সে অন্যায় অবিচার জুলুম ও সশস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল হয়েছি। সেই লড়াইটিই বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধে মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমাণ্ড করেছি, সেই লড়াই আমার সংগ্রামী জীবনেরই অংশ।
একইভাবে আমেরিকায় এসে আরেক মানবিক লড়াইয়ে অংশ নিয়েছি। এখানেও যেকোনো সংকটাপন্ন মানুষের পাশে আত্মনিয়োগ করেছি। বাংলাদেশের মানবিক ভালোবাসার সঙ্গে আমেরিকার প্রাতিষ্ঠানিক মানবিক কর্মসূচিকে একত্ব করেছি। সেই কাজ দিনে দিনে ব্যাপ্তি লাভ করেছে। এখন এই সমাজে হোম কেয়ার একটি প্রতিষ্ঠিত সেবা ব্যবস্থা। আমরা এর মধ্য দিয়েই মানবিক ভালোবাসার চর্চা করি।
আবু জাফর মাহমুদ এই সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রির স্বীকৃতি তার তরুণ বয়সের নেতা, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান সংগঠক সদ্যপ্রয়াত সিরাজুল আলম খানের প্রতি উৎসর্গ করে বলেন, তিনি আমার নেতা। ছাত্র বয়সে তিনি আমাকে লড়াই করতে শিখিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন, ১৯৬২ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের ‘ফিলোসফিক্যাল ক্যাটালিস্ট’।
অনুষ্ঠানে বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ার পারিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।