মালদ্বীপে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরের মৃত্যু নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। ভারতীয় ডর্নিয়ার বিমান ব্যবহারের অনুমতি দিলে ওই কিশোরের প্রাণ বেঁচে যেত বলে স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে।
ডর্নিয়ার বিমান মূলত হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (এইচএএল) তৈরি করে থাকে। মালদ্বীপে মানবিক সহায়তার জন্য এই বিমান ভারত থেকে সরবরাহ করা হতো।
মারা যাওয়া কিশোর ব্রেন টিউমার ও স্ট্রোকের সঙ্গে লড়াই করছিল। মৃত্যুর আগে তার পরিবার তাকে গাফ আলিফ ভিলিংগিলির প্রত্যন্ত দ্বীপ উইলমিংটন থেকে মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স খুঁজছিল। একটু উন্নত চিকিৎসার জন্য তারা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স খুঁজছিল বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বুধবার রাতে কিশোর যখন স্ট্রোক করে তখন থেকেই দুর্দশার খবর সামনে আসতে থাকে। তার পরিবার তাকে আকাশপথে রাজধানীতে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানায়।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত তাদের কলের কোনো সাড়া দেওয়া হয়নি। পরে দেশটির বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ প্রতিক্রিয়া জানায়। কিন্তু ততক্ষণে গুরুতর অবস্থার ১৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
ঘটনার পর গাফ আলিফ ভিলিংগিলিতে হাসপাতালের কাছে বিক্ষোভ শুরু হয়। সকলেই কর্তৃপক্ষের দেরিতে সাড়া দেওয়াকেই দায়ী করে ক্ষোভ জানিয়েছে।
কিশোরের শোকাহত বাবা স্থানীয় গণসমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা স্ট্রোকের পরে অবিলম্বে তাকে মালেতে নিয়ে যাওয়ার জন্য আইল্যান্ড এভিয়েশনকে কল করেছিলাম কিন্তু তারা আমাদের কলের উত্তর দেয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় তারা সাড়া দেয়। সমাধান হলো এই ধরনের ক্ষেত্রে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স থাকা।’
দেরিতে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও জীবন রক্ষা করা যায়নি। ততক্ষণে তার স্বাস্থ্য অনেক খারাপ হয়ে যায়। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর কিশোরকে দ্রুত একটি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়।
তবে মালদ্বীপের স্বাস্থ্য পরিষেবা আসান্ধা কোম্পানি লি. বিবৃতিতে বলেছে, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে দেরি হয়েছে। মালদ্বীপের এমপি মিকাইল নাসিম এক্স-এ লিখেছেন, ‘ভারতের প্রতি রাষ্ট্রপতির বিদ্বেষ মেটাতে জনগণকে তাদের জীবন দিয়ে মূল্য দিতে হবে না।’
ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের পটভূমিতে এই ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে, বিশেষ করে গত বছরের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু দায়িত্ব নেওয়ার পর। নতুন রাষ্ট্রপতি চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ইঙ্গিত ও পূর্বের ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট’ নীতি থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়ে পররাষ্ট্র নীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও খারাপ হয় যখন মালদ্বীপের মন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে এক্সে অবমাননাকর টুইট করেন।