Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeআন্তর্জাতিকভারতের ত্রিপুরায় ভয়াবহ বন্যা, খুলে দেওয়া হয়েছে জলাধারের গেট

ভারতের ত্রিপুরায় ভয়াবহ বন্যা, খুলে দেওয়া হয়েছে জলাধারের গেট

জয় বাংলাদেশ: ত্রিপুরাসহ উত্তর–পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ অংশে টানা বৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার অন্তর্গত আগরতলা বিমানবন্দরে রেকর্ড পরিমাণে ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বিমানবন্দরটি অনেকটাই উঁচুতে অবস্থিত হলেও সেখানে আংশিকভাবে পানি প্রবেশ করেছে।

পশ্চিম ত্রিপুরা ছাড়াও অন্যান্য জেলা যেমন সিপাহিজলা, ধলাই, উত্তর ত্রিপুরা, গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা ও উনাকোটি অংশিকভাবে জলের তলায় চলে গেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ‘কমলা সতর্কতা’ জারি করেছে। এই সতর্কতার অর্থ রাস্তাঘাট, নদীনালা ও নিচু এলাকা বিপদগ্রস্ত, বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে এবং ভূমিধস বাড়ছে।

ত্রিপুরার বাংলাদেশঘেঁষা খোয়াই জেলার প্রশাসন সর্বোচ্চ ‘লাল সতর্কতা’ জারি করেছে। কারণ, খোয়াই নদের পানির স্তর বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গেছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৩১ বছর পর মধ্য ত্রিপুরার ধলাই জেলার বিশাল জলাধার ডুম্বুরের (৪১ বর্গকিলোমিটার) এক দিক থেকে জল যাওয়ার গেট বা ‘স্ল্যাপ গেট’-এর তিনটির মধ্যে একটি খুলে দেওয়া হয়েছে। এর জেরে বাংলাদেশের কিছু অংশ প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কাতেই এই গেট খুলে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তাতে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে না অবনতি হয়েছে, তা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।

রাজ্যের এক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘গেট খুলে না দিলে জলাধার ফেটে গোটা অঞ্চল জলের তলায় চলে যেত। কিন্তু গেট খুলে দেওয়ার ফলে এখন নদীনালায় জলের মাত্রা বেড়ে গেছে। কী করা উচিত ছিল, তা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে।’

ত্রিপুরায় মোট ১০টি প্রধান নদীর মধ্যে আজ বিকেল পর্যন্ত ৯টি নদীতে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছিল। মনে করা হচ্ছে, রাতে বৃষ্টি হলে আগামীকাল সকালের মধ্যে সব কটি নদীতে পানি বিপৎসীমার ওপরে চলে যাবে। রাজধানী আগরতলায় প্রায় সব প্রধান সড়ক হাঁটুসমান জলের মধ্যে রয়েছে এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রা প্রায় পুরোপুরি ব্যাহত হয়েছে।

বুধবার রাতে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে বড় ধরনের বিপদের আশঙ্কার ইঙ্গিত দিয়ে সাধারণ মানুষকে পাকা বাড়িতে, উঁচু স্থানে বা নিরাপদ সরকারি আশ্রয়শিবিরে যেতে বলা হয়েছে। স্থানীয় মানুষ প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, গত বেশ কয়েক দশকে এ রকম বন্যা তাঁরা দেখেননি। রাজ্য সরকারের তরফে প্রাথমিক ত্রাণের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করা গেছে।

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য জরুরি পরিস্থিতিকালীন নিরাপত্তা বাহিনীর (এনডিআরএফ) সদস্যসংখ্যা বাড়ানোর আবেদনও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। রাজ্য সরকার আপাতত আগামীকাল স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments