বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের ওজোন পার্ক অফিস আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে। ১৩ জানুয়ারি শুক্রবার বর্ণ্যাঢ্য অনুষ্ঠানিকতায় ১১২৭ লিবার্টি এভিনিউতে, তিন হাজার বর্গফুটের প্রশস্ত অফিসের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এণ্ড সিইও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ। উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে ব্রুকলীনসহ নিউইয়র্কের বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্ন বয়সী অন্তত. তিন শতাধিক বাংলাদেশি নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
জমকালো ওই আয়োজনে কংগ্রেসম্যান হাকীম জেফরিস, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল মেম্বর শেখর কৃষ্ণান ও নিউইয়র্ক স্টেট এর অ্যাসেম্ব্লি উইমেন জেনিফার রাজকুমারের পক্ষ থেকে বিশেষ শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে এই শুভেচ্ছাবার্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদের হাতে তুলে দেন নিউইয়র্ক শহরের বিভিন্ন সংবাদপত্রের সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কের কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট ৩৯ এর নির্বাচিত কাউন্সিল উইমেন বাংলাদেশি কমিউনিটির গর্বের পরিচয় সাহানা হানিফ। বক্তব্য রাখেন বাংলা চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত অভিনেতা আহমেদ শরীফ এবং নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ।
অফিস উদ্বোধন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আমার সার্থকতা, বাংলাদেশে আমরা সবাই পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে সেবা ভালোবাসা ও পারস্পারিক সম্মানবোধ ও সামাজিক মূল্যবোধ শিখেছি। আমরা সেটিই বহন করে চলেছি। এই আমেরিকান সমাজ এখন আমাদের নিয়েই। আমাদের জন্মভূমিতে মানুষের প্রতি মানুষের যে ভালোবাসা ও কল্যাণকামনা, এটিই মানুষের মানবিক অস্তিত্ব। এই অস্তিত্ব নিয়েই বাংলাদেশি আমেরিকান সমাজ আমরা গড়ছি।
জাফর বলেন, আমরা লড়াই করে একটা রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছি। যখন আমাদের পায়ে জুতো ছিল না, অস্ত্র দেখলেও ভয় পেতাম , সেই তরুণ যুবকরা যুদ্ধ করে রাষ্ট্র জন্ম দিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে সভ্য ও উন্নত দেশ আমেরিকায় এসেছি। এখানে আমাদের যা কিছু সুন্দর, যা কিছু ,মানবিক তা নিয়ে এসে প্রমাণ করেছি, ভালোবাসা ছাড়া কোনো ‘কেয়ার’ বা যত্ন নাই। আমাদের জন্মের সময় জীবন মৃত্যুর এক কঠিন চ্যালেঞ্জ পার করেন আমাদের মায়েরা। এই সত্য সবার জন্যই এক। জন্মের পর যারা আমাদের সেবা দিয়েছেন, আদর যত্ন করেছেন, কোলে নিয়েছেন, তারা তো কেউ কোনো অর্থ নেননি। তাহলে কিসের বিনিময়ে তারা করেছেন? এটিই পারিবারিক মর্যাদা ও ভালোবাসার এক ঐতিহ্য। সেই ভালোবাসা ও মর্যাদাসহই আমরা এখানে এসেছি।
আবু জাফর মাহমুদ হোম নিউইয়র্ক শহরে বাংলাদেশিদের মাঝে হোম কেয়ার সেবার সূচনাকালের কথা তুলে ধরে বলেন, যখন হোম কেয়ার শুরু করেছি, নিউইয়র্ক স্টেট এর সিলেবাস নিয়ে কাজ করা শুরু করেছি। শিক্ষাক্ষেত্রে কাজ করেছি। প্রশিক্ষণের ভেতর একটি দিন আলাদা করে আমি প্রশিক্ষনার্থীদের পারিবারিক মূল্যবোধের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। এটিই তাদের প্রশিক্ষণ। এটি ছাড়া আমাদের সন্তানদের বাংলাদেশি রাখতে পারবো না। এটি ছাড়া পারিবারিক বন্ধন সুরক্ষা করতে পারবো না। এটি ছাড়া আমরা পরিবার প্রথা ধরে রাখতে পারবো না। আমাদের জাতিগত বৈশিষ্ট্য রক্ষা করেই আমেরিকার সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর যে প্রয়াস, সেটিকে আমি যুদ্ধ হিসেবে নিয়েছি। এসঙ্গে জনাব জাফর, পবিত্র ও হালাল উপার্জনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, হোম কেয়ারের একটি বাণিজ্যিক কার্যক্রম। আমরা বিশ্বাস করি, এটি অত্যন্ত কল্যানমুখি একটি উদ্যোগ। এখানে বাণিজ্য মহান স্রষ্ঠার সঙ্গে।
নতুন অফিস পরিসরের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এটি আমাদের ’কাচারি ঘর’। এখানে আপনারা যেকোনো অনুষ্ঠান করবেন। আপনাদের প্রয়োজনে ব্যবহার করবেন। এখানে বাণিজ্যের কোনো সম্পর্ক নাই। এখানে সপ্তাহে সাতদিন অবিরাম সেবা পাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোকবল নিয়োগ করা হবে। ঘরে ঘরে গিয়ে বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের দায়িত্বশীলরা তাদের সেবা কার্যক্রম চালাবে। আপনাদের খোঁজ রাখবে। পাশে থাকবে।
’তিনি স্থানীয় সম্পাদকবৃন্দ ও গণমাধ্যমের সকল সাংবাদিকদের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, তারা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে প্রবাসী জীবনের ভালোমন্দ তুলে ধরছেন। এটি তাদের শুধু ব্যবসা নয়, এটি তাদের ভালোবাসা ও দায়িত্ব। এখানে তারা অবিচল। তারা সবাই বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের কার্যক্রমের সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন, এটি আমাদের অনেক বড় পাওয়া।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বাংলাদেশের কৃতি শ্যূটার ও আমেরিকায় বাংলাদেশি সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি এস এম ফেরদৌস ও সাংবাদিক আদিত্য শাহীন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের সেবা কার্যক্রম বিষয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে দূর দূরান্ত থেকে আগত ব্যক্তিবর্গ বিশেষ করে সম্পাদক, প্রকাশক ও সাংবাদিকদের উপস্থিতি, যথার্থ মুল্যায়ণ প্রদানসহ বিরল আন্তরিকতা প্রদর্শনের জন্য বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।