জয় বাংলাদেশ : ব্যাংকখাত সংস্কারের অংশ হিসেবে ছয় রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক- সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহীদের (সিইও) চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করছে সরকার। বৃহস্পতিবার এফআইডি থেকে ব্যাংকগুলোকে লিখিতভাবে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ।
ব্যাংকখাত সংস্কারের অংশ হিসেবে ছয় রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক- সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহীদের (সিইও) চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করছে সরকার।
এসব ব্যাংকের এমডিদের সঙ্গে চুক্তির অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করতে— ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি)।
বৃহস্পতিবার এফআইডি থেকে ব্যাংকগুলোকে লিখিতভাবে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে টিবিএসকে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এসব চিঠির কপি টিবিএস দেখেছে। ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানদের কাছে পাঠানো পৃথক চিঠিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বলেছে, ”ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও’র সাথে পরিচালনা পর্ষদের সম্পাদিত চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিলের জন্য সরকারের সুপারিশ বা সম্মতি জ্ঞাপন করা হলো।”
”ব্যাংক কোম্পানি আইন ও পরিচালনা পর্ষদের সম্পাদিত চুক্তিপত্র অনুযায়ী, এমডি ও সিইও’র চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিলের বিষয়ে পরবর্তী বিধিগত কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো”- যোগ করা হয়েছে চিঠিতে।
এফআইডি’র কর্মকর্তারা জানান, ব্যাংকখাত সংস্কারের অংশ হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে – ছয় ব্যাংকের এমডি ও প্রধান নির্বাহীদের (সিইও) চুক্তিভিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই চার ব্যাংকের সিইও ও এমডিরা ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে যোগদান করেন। তাই এমডিদের চুক্তির অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করার এখতিয়ারও ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ বা পর্ষদের চেয়ারম্যানের।
তাঁরা জানান, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপত্রে চুক্তি বাতিলের ক্ষেত্রে এমডিদের নোটিশ দেওয়াসহ বিভিন্ন শর্ত থাকে, সেসব শর্ত মেনে তাদের সঙ্গে নিয়োগের চুক্তি বাতিল করতে হবে। চেয়ারম্যান কোম্পানি সেক্রেটারির মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করবেন। এজন্যই এমডিদের নিয়োগ বাতিল করতে ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান এমডিদের নিয়োগ বাতিল হওয়ার পর নতুন এমডি নিয়োগ দেবে এফআইডি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, বিদ্যমান এমডিদের বহাল রেখে ব্যাংকখাত সংস্কার করা সম্ভব হবে না। এছাড়া, তাঁরা দায়িত্বে থাকাবস্থায় ব্যাংকগুলোর আর্থিক ক্ষত সম্পর্কে প্রকৃত চিত্রও পাওয়া যাবে না। তাই তাদের নিয়োগ বাতিল করে– নতুন এমডি নিয়োগ প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।
ব্যাংকখাত সংস্কারের লক্ষ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে আর্থিক খাত বিষয়ে অভিজ্ঞ ছয়জনকে সদস্য করা হয়েছে। টাস্কফোর্সের সমন্বয়ক হিসেবে থাকবেন– কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। ব্যাংকখাত সংস্কারে নানা পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে এই টাস্কফোর্স।
তিন বছর মেয়াদি চুক্তির ভিত্তিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর এমডি ও সিইওদের নিয়োগ দেয় সরকার। সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম ২০২২ সালের ১৪ আগষ্ট নিয়োগ পান। আর ২০২৩ সালের ৩ মে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান মো. আব্দুল জব্বার। রূপালী ব্যাংকের মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর নিয়োগ পান ২০২২ সালের ২৮ আগষ্ট। আর অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোরশেদুল কবির নিয়োগ পান ২০২২ সালের ১৪ আগষ্ট।