Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeআন্তর্জাতিকসুদের হার কমানো নিয়ে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত বুধবার

সুদের হার কমানো নিয়ে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্ত বুধবার

জয় বাংলাদেশ : পুরো বিশ্বের আর্থিক খাত এখন তাকিয়ে আছে ফেডারেল রিজার্ভের দিকে। সুদের হার কমানোর বিষয়ে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী বুধবার কী সিদ্ধান্ত নেয়, নজর সেদিকেই। এই বহুল প্রত্যাশিত পদক্ষেপ শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, তার প্রভাব থাকবে পৃথিবীজুড়েই। এমনকি ডলার তেজি থাকবে, নাকি তা তেজ হারাবে, তা–ও নির্ভর করবে ফেডের সিদ্ধান্তের ওপর।

মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে ফেড দীর্ঘ সময় ধরে নীতি সুদহার বাড়িয়েই চলছিল। অনেক বছরের মধ্যে এখন তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। রয়টার্স জানিয়েছে, বেশ কয়েক বছরের মধ্যে নেওয়া প্রথম পদক্ষেপে সুদের হার কতটা কমানো হবে, তা নিয়ে পরিষ্কার কোনো ধারণা এখনো পাওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে চলতি বছরের শেষে রয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ফলে বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি বাড়তি উদ্বেগের বিষয়।

সোসাইটি জেনারেলের এফএক্স অ্যান্ড রেটস বিভাগের করপোরেট গবেষণা বিষয়ক প্রধান কেনেথ ব্রো বলেন, ‘আমরা জানি না এই ধারা কেমন হবে। এটি কি ১৯৯৫ সালের মতো হবে, যখন ৭৫ ভিত্তি পয়েন্ট করে হার কমানো হচ্ছিল। নাকি এটা ২০০৭–০৮ সালের মতো হবে, যখন ৫০০ ভিত্তি পয়েন্ট কমানো হয়েছিল।’

দেখা যাক বিশ্বের আর্থিক বাজারে প্রত্যাশা কী:
১. নেতৃত্বকে অনুসরণ করা

গত বসন্তে যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ছিল। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তখন এই প্রশ্ন ছিল যে ফেড যদি নীতি সুদ না কমায়, তাহলে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিংবা ব্যাংক অব কানাডা সুদের হার কতটা কমাতে পারবে। শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র যে সুদের হার কমাচ্ছে, তা দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলোকে এখন স্বস্তি দেবে।

ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে যাচ্ছে বলে বাজারে যে আশাবাদ তৈরি হয়েছে, তা ইতিমধ্যে অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে নীতি সুদ কমাতে উৎসাহিত করেছে। তবে ইউরোপে ফেডের তুলনায় সুদের হার হ্রাস কম হবে। কারণ, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ব্যাংক অব ইল্যান্ড মূল্যস্ফীতির বিষয়ে সতর্ক অবস্থানের কথা জানিয়েছে।

বন্ড বাজারের জন্যও নীতিসুদ কমানো আশীর্বাদ হতে পারে। ২০২৩ সাল শেষের পর এই প্রথম বারের মতো মার্কিন, জার্মান ও ব্রিটিশ সরকারি বন্ডের বিপরীতে সুদ আয় কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২. স্বস্তির জায়গা

উদীয়মান দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য মার্কিন সুদের হার কমানোর বিষয়টি বেশ স্বস্তির ব্যাপার হবে। এর ফলে তারা অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির জন্য আরও বেশি সমর্থন জোগাতে পারবে। রয়টার্স যে ১৮টি উদীয়মান দেশের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করেছে, তাদের অর্ধেকই এরই মধ্যে সুদের হার কমাতে শুরু করেছে। তারা এই কাজ করছে ফেডের পদক্ষেপ নেওয়ার আগেই।

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অনিশ্চয়তার বিষয়টিও তাদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে রয়েছে। বিএনপি পারিবাসের কর্মকর্তা ট্রাং নগুয়েন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হবে। রাজস্ব নীতির যে ভিন্নতা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, তা সুদের হার কমানোর এই কালচক্রকে জটিল করে তুলেছে।

৩. ডলারের শক্তিক্ষয়

যেসব দেশ আশা করছে যে মার্কিন নীতিসুদ কমানোর ফলে ডলারের শক্তি কমবে এবং তাদের মুদ্রা শক্তিশালী হবে, তাদের সেই আশা পূরণ না–ও হতে পারে। বিনিয়োগ ব্যাংক জে পি মর্গান স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে ফেডের সুদের হার কমানোর সর্বশেষ চার কালচক্রের তিনটির ক্ষেত্রেই প্রথম দফায় ডলার শক্তিশালী হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের নীতি সুদহার কমানো অন্যদের জন্য কতটা আপেক্ষিক, তার ওপর ডলারের দামের বিষয়টি নির্ভর করবে। ডলার যদি সত্যিই কম আয়ের মুদ্রা না হয়ে ওঠে, তাহলে অ–মার্কিন বিনিয়োগকারীদের কাছে এর আবেদন থেকেই যাবে।

তবে এশিয়ার অনেক দেশ মার্কিনদের আগেই সুদের হার কমিয়েছে। এর ফলে জুলাই ও আগস্টে দক্ষিণ কোরিয়ার ওন, থাইল্যান্ডের বাথ ও মালয়েশিয়ার রিঙ্গিতের দাম বেড়েছে। আর ডলারের বিপরীতে চীনের ইউয়ানের দাম বছরজুড়ে যতটা কমেছিল, সেই ঘাটতি ওই সময়ে পূরণ হয়ে যায়।

৪. ইকুইটির অগ্রযাত্রা

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকার কারণে অর্থ বিনিয়োগ হোঁচট খেয়েছিল। মার্কিন সুদহার কমলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড জোরদার হবে, ফলে ইকুইটি বিনিয়োগ আবার বাড়তে পারে। আগস্টে দুর্বল মার্কিন কর্মসংস্থান পরিসংখ্যান প্রকাশের পরের তিন দিনে বিশ্বে শেয়ারবাজারের ৬ শতাংশ পতন হয়েছিল।

৫. উজ্জ্বল দিন

ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমালে মূল্যবান ও মৌলিক ধাতু সুবিধা পেতে পারে। কম সুদের হার ও দুর্বল ডলার বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন ধাতু কিনতে উৎসাহিত করতে পারে। স্বর্ণের মতো মূল্যবান ধাতুর দাম বাড়তে পারে। দেখা গেছে বন্ড থেকে আয় কমে গেলে এর দাম বাড়ে, কারণ বিনিয়োগকারীরা সোনা কেনেন।

সোনার দাম এখন রেকর্ড উচ্চতায় রয়েছে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের জন রিড বলেন, বিনিয়োগকারীদের সোনা কেনার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments