নিজের দেশেই বিচারের মুখে। তার সমর্থকরা বলছেন, বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর টার্গেটে পরিণত হয়েছেন তিনি। শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে বাংলাদেশের আদালত তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত নয় বলে জানিয়েছে সরকার। ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক ক্ষুদ্র ঋণের সাহায্যে সারাবিশ্বের দরিদ্র, দুস্থ ও অসহায়দের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি এখন জামিনে আছেন এবং রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন।
শ্রমিকদের জন্য কল্যাণ ফান্ড গঠন না করতে পারাসহ সরকার এ ধরনের আরও অনেক অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে উল্লেখ করে আমানপোর জানতে চান, এসব অভিযোগ আনার কারণ কী। জবাবে ড. ইউনূস বলেন, এ নিয়ে দেশের ও দেশের বাইরের যেসব আইনজীবীর সঙ্গেই আলোচনা করেছি, তারা সবাই সম্মত হয়েছে যে এসব মামলার কোনো ভিত্তি নেই। তারা এ ধরনের কোনো মামলা এর আগে দেখেননি ও পরিচালনা করেননি। এটা একধরনের হয়রানি।
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেছেন সিএনএনের ক্রিস্টিয়ান আমানপোর। সাক্ষাৎকারটি সম্পাদনা করে আংশিক অনুবাদ করে দেওয়া হলো।
প্রশ্ন পর্বের আগে সিএনএন এর খবরের শুরুতে বলা হয়— বাংলাদেশে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূসের সমর্থকরা বলছেন, তিনি ওই দেশের প্রধানমন্ত্রীর টার্গেটে পরিণত হয়েছেন।
আমানপোরের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন মারাত্মক সব ঘটনা ঘটছে। বারাক ওবামার মতো ডজন ডজন নোবেলজয়ী আপনার বিরুদ্ধে বিচারিক হয়রানি বন্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে চিঠি লিখেছেন। এসব মামলার পরিণতি কি হতে পারে? আপনি কি জেলে যেতে পারেন?
জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমাকে ইতিমধ্যেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। জামিনের মেয়াদ শেষ হলে আমাকে ফের জামিন দিতে পারে, নয়তো আমিসহ অন্য যাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তারা সবাই জেলে যেতে পারি। ৩ মার্চে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা আরেকটি নতুন মামলা হচ্ছে। আমাদের দুর্নীতি, মানি লন্ডারিংসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। ওই মামলায় সাজার মেয়াদ আরও দীর্ঘ। আমরা জানিনা এসব কখন শেষ হবে।
শেখ হাসিনা কি তাকে রাজনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে ভাবছেন কিনা, এই প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস ‘আমি জানি না’। রাজনীতির সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ওয়ান ইলেভেনে তাকে সরকার প্রধান হওয়ার প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি বারবার বলেছি, রাজনীতি করার কোনো ইচ্ছা আমার নেই।
সম্প্রতি রাশিয়ার কারাগারে দেশটির বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ইউক্রেনে অবস্থানরত আমানপোর ড. ইউনূসের কাছে জানতে চান, আপনি কি বিদেশে থাকার প্রস্তাব পেয়েছেন?
ড. ইউনূস বলেন, অনেক বিদেশি বন্ধুই আমাকে দেশ ছাড়তে বলেছেন। দেশ ছাড়লে তারা সকল সুযোগ সুবিধাসহ সারা দুনিয়ায় আমার কাজের নিশ্চয়তার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। আমি ১৯৭১ সালের শেষে (মিডল) টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি তে অধ্যাপনা করার সময়টায় দেশে ফিরে আসার ঘোষণা দিয়েছিলাম এবং আমি দেশে ফিরেছিলাম। আমি শুধু মানুষকে সাহায্য করতেই ফিরেছিলাম।