হামলা অব্যাহত রাখলে লেবাননের সীমান্ত থেকে হিজবুল্লাহকে সরিয়ে দিতে কাজ করবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। হিজবুল্লাহ বুধবার আন্তঃসীমান্তে মারাত্মক হামলা চালানোর পর বৃহস্পতিবার এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরায়েলের মন্ত্রী বেনি গ্যান্তজ। খবর বিবিসির।
বেনি গ্যান্তজ বলেন, উত্তর ইসরায়েলে জঙ্গিরা গুলি চালানো বন্ধ না করলে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করবে। কূটনৈতিক সমাধানের সময় ফুরিয়ে আসছে।
এদিকে, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি বলেছেন, উত্তরে আরও লড়াইয়ের জন্য সৈন্যরা ‘খুব উচ্চ প্রস্তুতিতে’ নিয়ে রেখেছে। আমাদের প্রথম কাজ হল উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার করা। এতে সময় লাগবে।’
নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকে সীমান্তে গোলাগুলি বেড়েই চলেছে। ৮ অক্টোবরের পর বুধবার হিজবুল্লাহ একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক আন্তঃসীমান্ত আক্রমণ করেছে।
এমন পরিস্থিতির পর বিশ্লেষকরা শঙ্কা করছেন, গাজার সংঘাত পুরো অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
বুধবার রাতে একটি সংবাদ সম্মেলনে গ্যান্তজ বলেন, ‘ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তের পরিস্থিতি পরিবর্তনের দাবি রাখে। একটি কূটনৈতিক সমাধানের সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। যদি বিশ্ব ও লেবাননের সরকার ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের উপর গুলিবর্ষণ ঠেকাতে এবং হিজবুল্লাহকে সীমান্ত থেকে দূরে রাখতে কাজ না করে, তাহলে আইডিএফ ব্যবস্থা নেবে।’
পশ্চিমা রাষ্ট্র, ইসরায়েল, উপসাগরীয় আরব দেশ ও আরব লীগ শিয়া মুসলিম সংগঠন হিজবুল্লাহকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। ইরানের অর্থায়নে এটি বিশ্বের সবচেয়ে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত, অ-রাষ্ট্রীয় সামরিক বাহিনী।
মারাত্মক আন্তঃসীমান্ত অভিযান চালালে ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরায়েলি সৈন্যরা তখন দক্ষিণ লেবাননে আক্রমণ করে।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বুধবার জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ যোদ্ধা ও তার দুই আত্মীয় নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের সীমান্ত থেকে প্রায় ২ কিমি দূরে অবস্থিত একটি শহর বিনতে জেবিলের একটি বাড়িতে হামলাটি করা হয় বলে জানা গেছে।
হিজবুল্লাহর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতদের একজন ইব্রাহিম বাজ্জি। তিনি অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন তিনি।
অক্টোবর থেকে লেবাননে ১০০ জনের বেশি লোক নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই হিজবুল্লাহ যোদ্ধা। কিন্তু নিহতদের মধ্যে তিন সাংবাদিক সহ বেসামরিক নাগরিকও রয়েছে।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ১১ সপ্তাহের লড়াইয়ে গাজায় ২১ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।