জয় বাংলাদেশ: ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করেছেন যে অদূর ভবিষ্যতে ইসরায়েল হিজবুল্লাহর সঙ্গে ‘বড় ধরনের সংঘর্ষের’ মুখোমুখি হতে পারে। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) একটি কৌশলগত আলোচনায় নিরাপত্তা প্রধানদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি। নেতানিয়াহু বলেন, উত্তরের সীমান্তে সংঘর্ষটি বড় আকার ধারণ করতে পারে।
চ্যানেল ১৩-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, নেতানিয়াহুর ধারণা, হিজবুল্লাহর সঙ্গে সর্বাত্মক সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে উঠছে। যদিও কূটনৈতিক সমাধান সম্ভব ছিল, যা লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে ইসরায়েলের প্রায় প্রতিদিনের সীমান্ত সংঘর্ষের অবসান ঘটাতে পারতো, তা অধরাই রয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতানিয়াহুর এক সহযোগী জানান, সম্ভাব্য সংঘর্ষের কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। তবে শীর্ষ কর্মকর্তারা কয়েক মাস ধরে সতর্ক করছেন যে এটি কয়েক সপ্তাহ বা মাসের মধ্যেই শুরু হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর সঙ্গে চলমান সংঘর্ষের কারণে ইসরায়েলের হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা মনে করেন, এই সমস্যার কূটনৈতিক সমাধান নেই। তাদের মতে, আন্তর্জাতিক অনুমোদন এবং আইডিএফের (ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স) প্রস্তুতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সামরিক অভিযান শুরু করা উচিত।
চ্যানেল ১৩ জানায়, উত্তরে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে গাজায় সেনাবাহিনীর উপস্থিতি কমে যাওয়ার আশঙ্কায় ইসরায়েল সতর্ক রয়েছে। এ কারণে উত্তরে আরও সংঘর্ষের আশঙ্কা থাকলেও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এখনও দ্বিধাগ্রস্ত।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নেতানিয়াহু মনে করেন, হিজবুল্লাহর সঙ্গে লড়াই হলেও আইডিএফ গাজায় হামাসের ওপর চাপ বজায় রাখতে পারবে। তবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এ বিষয়ে নিশ্চিত নন। গ্যালান্টের মতে, হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধ হলে গাজায় ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর উপস্থিতি কমতে পারে, যা সেখানে জিম্মিদের মুক্তির সুযোগকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। গাজায় এখনও ইসরায়েলের ১০১ জন জিম্মি জীবিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, লেবাননে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের জন্য ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা করছে। তারা দাবি করছে, যুদ্ধ এড়াতে কূটনৈতিক চেষ্টাগুলো সফল হয়নি। তবে আশা করা হচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর, নভেম্বরের ৫ তারিখের আগে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমোস হোচস্টেইন লেবাননের সঙ্গে একটি যুদ্ধ এড়ানোর প্রচেষ্টার অগ্রগতি উপস্থাপন করবেন বলে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, হিজবুল্লাহর দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা নাইম কাসেম শনিবার সতর্ক করেছেন, ইসরায়েল যদি সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করে, তাহলে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে। তার মতে, যুদ্ধের ফলে উভয় পক্ষই বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে। তিনি আরও বলেন, “যদি তারা মনে করে এই যুদ্ধ এক লাখ মানুষকে তাদের বাড়িতে ফেরাবে, তবে আরও হাজার হাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”
৮ অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ সীমান্তে ইসরায়েলি সেনা চৌকিতে প্রায় প্রতিদিনই হামলা চালাচ্ছে। তাদের দাবি, গাজায় হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন জানাতেই এই হামলা করা হচ্ছে।
এই সংঘর্ষের ফলে এ পর্যন্ত ২৫ জন ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক এবং ২০ জন আইডিএফ সেনা নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইসরায়েলের হামলায় হিজবুল্লাহর ৪৪০ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই লেবাননে এবং কিছু সিরিয়ায় নিহত হয়েছেন।