Tuesday, November 19, 2024
Google search engine
Homeস্বদেশ সংবাদ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষ: পরবর্তী ব্যবস্থার অপেক্ষায় সমন্বয়কেরা

৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম শেষ: পরবর্তী ব্যবস্থার অপেক্ষায় সমন্বয়কেরা

জয় বাংলাদেশ : বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সরকার দাবি পূরণের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়, তা পর্যবেক্ষণ করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা। তাঁরা চার দফা দাবিতে গত রোববার রাত ১০টায় সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছিলেন, যা আজ মঙ্গলবার রাত ১০টায় শেষ হয়েছে ।

ছাত্রদের দেওয়া চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে ইন্টারনেট সংযোগ সচল করা, শিক্ষার্থীদের আসার ব্যবস্থা করে দিয়ে হল খুলে দেওয়া, আন্দোলনের সমন্বয়কদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কারফিউ তুলে দেওয়া। কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চারজন সমন্বয়ক রোববার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে। সেদিন রাতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে দেখতে যান সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ ও মাহিন সরকার। তাঁরাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক।

সমন্বয়ক সারজিস আলম সোমবার বিকেলে বলেন, ‘আমরা আমাদের জায়গা থেকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে চারটি দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। এটি এখনো বহাল আছে। সরকারি কর্মকর্তাদের কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা বলছি, আলটিমেটাম মাথায় রেখে আমাদের দাবিগুলো যেন দ্রুত মেনে নেওয়া হয়। আমরা পর্যবেক্ষণ করছি যে সরকার আমাদের দাবিগুলো কতটুকু গুরুত্ব ও দ্রুততার সঙ্গে পূরণ করে। সে অনুযায়ী আগামীকাল (মঙ্গলবার) রাতে আমরা সবাই বসে সমন্বিত আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেব।’

সারজিসসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুজন সমন্বয়ক ও একজন সহসমন্বয়ক গত শুক্রবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সরকারের দুজন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁরা হলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। তাঁদের কাছে লিখিতভাবে আট দফা দাবি তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

সেই আট দফা এখনো বহাল রয়েছে বলে জানান সারজিস আলম। মন্ত্রীদের কাছে দেওয়া আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে নিহতদের ঘটনা তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে গ্রেপ্তার ও বিচার। শহীদদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা, মাসিক ভাতা ও তাঁদের পিতামাতার মতামতের ভিত্তিতে একজন সদস্যকে চাকরির নিশ্চয়তা দেওয়া। সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে প্রশাসনিকভাবে সিট বরাদ্দ, সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করা এবং ছাত্র সংসদ চালু করা, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে করা সব মামলা প্রত্যাহার, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত সব শিক্ষার্থীকে সব ধরনের রাজনৈতিক, আইনি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের মাধ্যমে একাডেমিক হয়রানি না করার নিশ্চয়তা দেওয়া।

আট দফা দাবির বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ইতিমধ্যে তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে। দায়ীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা হবে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের পরিবারকে সহায়তা করবে সরকার। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ক্যাম্পাসগুলোতে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার কাজ চলছে। আট দফা দাবি সরকার সক্রিয়ভাবেই বিবেচনা করছে।

‘দেশে বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫৬ সমন্বয়কের যৌথ বিবৃতি’ শিরোনামে একটি খুদে বার্তা গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে গণমাধ্যমকর্মীদের মুঠোফোনে পাঠানো হয়। পরে একজন সমন্বয়ক মুঠোফোনে ওই বিবৃতি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

যৌথ বিবৃতিতে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ (সর্বাত্মক অবরোধ) কর্মসূচি আরও জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়, শুধু আদালতের রায়ের মাধ্যমে হত্যার দায় এড়াতে পারে না সরকার।

বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। ‘তিন শতাধিক’ ছাত্র-জনতাকে হত্যা করার অভিযোগ করা হয়েছে বিবৃতিতে।

এ ছাড়া বিবৃতিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম সারির কয়েকজন সমন্বয়ককে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে মনগড়া বক্তব্য আদায়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়েছে। এ ছাড়া সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদারসহ কয়েকজনের সন্ধান দাবি করা হয়েছে।

কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চালু রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে যে কর্মসূচির কথা গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, সে রকম কোনো কর্মসূচি আমাদের নেই।’

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

নতুন সংবাদ

Recent Comments